মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَصَلّ لِرَبّكَ وَانْـحَرْ ◌
অর্থ : “আপনার মহান রব তায়ালা উনার উদ্দেশ্যে নামায পড়–ন এবং কুরবানী করুন।” (পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২)
এখন কুরবানী করতে হলে কুরবানী উনার পশুর কতগুলো বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য রাখতে হয়। নিম্নে সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো-
কুরবানী যোগ্য পশু গৃহপালিত হতে হবে বন্য পশু দ্বারা কুরবানী দেয়া নাজায়িয : ইসলামী শরীয়ত উনার মধ্যে পবিত্র কুরবানী উনার জন্য পশুকে গৃহপালিত হওয়ার শর্ত বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لِكُلّ اُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا لِّيَذْكُرُوا اسْمَ اللهِ عَلٰى مَا رَزَقَهُمْ مِّنْ بَـهِيْمَةِ الْاَنْعَامِ ۗ
অর্থ : “আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য পবিত্র কুরবানী এই উদ্দেশ্যে নির্ধারিত করেছি, যেনো তারা ওই নির্দিষ্ট গৃহপালিত পশুগুলির উপর (যবেহ করার সময়) মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক উচ্চারণ করে যা তিনি তাদেরকে রিযিক হিসেবে দান করেছেন। (পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৪)
অর্থাৎ পবিত্র কুরবানী উনার পশু গৃহপালিত হতে হবে। আর এ ব্যাপারে ফিক্বহের কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
وَلَا يَـجُوْزُ فِى الْاَضَاحَىِّ شَيْئٌ مِنَ الْوَحْشِىِّ لِاَنَّ وُجُوْبَـهَا عُرِفَ بِاشَّرْعِ وَالشَّرْعُ لَـمْ يَرُدُّ بِالْاِيْـجَابِ اِلَّا فِى الْـمُسْتَأْنِسِ.
অর্থ : “কুরবানীর প্রাণীর বিধান হলো, পশু গৃহপালিত হতে হবে। বন্য বা জংলী প্রাণী গ্রহণযোগ্য নয়।” (বাদায়েউস সানায়ে ৪র্থ খ- ২০৫ পৃষ্ঠা, ফতওয়ায়ে আলমগীরী ৫ম খ- ৩৪৩ পৃষ্ঠা)
এমনকি বন্য পশু যদি পোষও মানে তারপরও উক্ত বন্য পশু দ্বারা কুরবানী করা জায়িয হবে না। এ ব্যাপারে বর্ণিত রয়েছে-
وَاِنْ ضُحِىَ بِظَبْيَةٍ وَحْشِيَةٍ اَنَسَتْ اَوْ بِبَقَرَةٍ وَحْشِيَةٍ اَنَسَتْ لَـمْ تَـجُزْ.
অর্থ : “বন্য হরিণ বা গয়াল যদি কারো পোষ মানে তারপরও এরূপ পশু দ্বারা কুরবানী জায়িয হবে না।” (ফতওয়ায়ে শামী ৫ম খ- ৩৪৩ পৃষ্ঠা)
কিন্তু গৃহপালিত পশু যদি বন্য আচরণ করে তারপরও উক্ত গৃহপালিত পশু দ্বারা কুরবানী জায়িয। যেমন এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে-
نَدَّتِ الْاَهْلِيَةُ تَوَحَشَّتْ فَرَمَاهَا عَنِ الْاَضْحِيَّةِ جَازَ.
অর্থ : “যদি গৃহপালিত পশু পালায়ন করে এবং তার মধ্যে বন্য আচরণ প্রকাশ পায়, তারপরও উক্ত পশু দ্বারা কুরবানী শুদ্ধ হবে।” (ফতওয়ায়ে আলমগীরী ৫ম খ- ৩৪৩ পৃষ্ঠা)
পশুটি গৃহপালিত বা জংলী তা চেনার জন্য সহজ পন্থা সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে-
فَاِنْ كَانَ مُتَوَلِدًا مِّنَ الْوَحْشِىِّ وَالْاِنْسِىِّ فَالْعِبْرَةُ لِلْاُمِّ
অর্থ : “আর যদি গৃহপালিত ও বন্য পশুর সংমিশ্রণে বাচ্চার জন্ম হয় তাহলে মায়ের দিক প্রাধান্য পাবে। কারণ পশুর নছব বা বংশ পরিচিতি হলো মায়ের দ্বারা।” (ফতওয়ায়ে আলমগীরী ৫ম খ- ৩৪৩ পৃষ্ঠা, ফতওয়ায়ে শামী ৯ম খ- ৫৩৪ পৃষ্ঠা, বাদায়েউস সানায়ে ৪র্থ খ- ২০৫ পৃষ্ঠা)
অন্যত্র বর্ণিত রয়েছে-
فَاِنْ كَانَتْ اَهْلِيَةٌ تَـجُوْزُ وَاِلَّا فَلَا حَتّٰى لَوْ كَانَتِ الْبَقَرَةُ وَحْشِيَةٌ وَالثَّوْرُ اَهْلِيَةٌ لَـمْ تَـجُزْ.
অর্থ : “গৃহপালিত হলে কুরবানী শুদ্ধ বা জায়িয হবে। আর যদি গৃহপালিত না হয় তা দ্বারা কুরবানী করা জায়িয হবে না। তা বন্য গরু, মহিষ, ছাগল, বকরী, ভেড়া ইত্যাদি যাই হোক না কেন।” (ফতওয়ায়ে আলমগীরী ৫ম খ- ৩৪৩ পৃষ্ঠা, ফতওয়ায়ে শামী ৯ম খ- ৫৩৪ পৃষ্ঠা, বাদায়েউস সানায়ে ৪র্থ খ- ২০৫ পৃষ্ঠা)