মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَأْمُرْ اَهْلَكَ بِالصَّلٰوةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا
অর্থ: “আপনার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং অনুসারী উনাদেরকে পবিত্র নামায উনার জন্য নির্দেশ মুবারক করুন এবং উনার উপর ধৈর্যধারণ বা অটল থাকতে বলুন।” (পবিত্র সূরা ত্বা-হা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩২)
অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ফরয হলো, পবিত্র নামায উনার গুরুত্ব ও ফযীলত অনুধাবন করে নিজে পবিত্র নামায আদায় করার সাথে সাথে পরিবারবর্গ বা অধীনস্থদেরকে আদায় করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সেজন্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
قُوا اَنْفُسَكُمْ وَاَهْلِيْكُمْ نَارًا
অর্থ: “জাহান্নামের আগুন থেকে তোমরা নিজে বাঁচো এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনদেরকে বাঁচাও।” (পবিত্র সূরা আত্তাহরীম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
অতএব, প্রত্যেক মু’মিন-মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরয হচ্ছে- পবিত্র নামায উনার সম্পর্কে ইলম অর্জন করে সঠিকভাবে পবিত্র নামায আদায় করার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের কোশেশ করা। আর সে লক্ষ্যেই অত্র “মি’রাজুল মু’মিনীন” কিতাবখানা প্রকাশ করা হলো।
স্মরণীয় যে, পবিত্র নামায আদায় করার জন্য যেরূপ উযু পূর্বশর্ত, তদ্রƒপ পবিত্র নামায কবুল হওয়ার জন্য পূর্বশর্ত হলো ইখলাছ।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا اُمِرُوْا اِلَّا لِيَعْبُدُوا اللهَ مُـخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ
অর্থ: “বান্দাদেরকে আদেশ করা হয়েছে, তারা যেন ইখলাছের সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করে।” (পবিত্র সূরা বাইয়্যিনাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
ইখলাছ উনার ব্যাখ্যায় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
ان تعبد الله كانك تراه فان لـم تكن تراه فانه يراك
অর্থ: “এমনভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করো অর্থাৎ মুসলমান উনাদের প্রতিটি মুহূর্তই যেহেতু ইবাদত উনার অন্তর্ভুক্ত, সেহেতু প্রতিটি মুহূর্ত এমনভাবে অতিবাহিত করো- যেন তুমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখছো। আর যদি মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখতে না পারো, তবে ধারণা করো যে- তিনি তোমাকে দেখছেন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র বুখারী শরীফ ও পবিত্র মুসলিম শরীফ)
এখন ইখলাছ উনার উক্ত দু’অবস্থা কিংবা দু’অবস্থার এক অবস্থা অবশ্যই অর্জন করতে হবে। অন্যথায় পবিত্র নামায, পবিত্র রোযা, পবিত্র হজ্জ, পবিত্র যাকাত ইত্যাদি যে ইবাদতই করা হোক না কেন, তা আদৌ কবুলযোগ্য হবে না। উপরন্তু ইবাদতকারীর জন্য জাহান্নাম অপরিহার্য হয়ে যাবে। যেমন পবিত্র সূরা মাঊন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَ ﴿٤﴾ اَلَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلٰوتِـهِمْ سَاهُوْنَ ﴿٥﴾ اَلَّذِيْنَ هُمْ يُرَاءُونَ ﴿٦﴾
অর্থ: “ওইসব নামাযীদের জন্য ওয়ায়িল (জাহান্নাম), যারা গাফলতির সাথে এবং মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে নামায আদায় করে।” (পবিত্র সূরা মাঊন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪, ৫, ৬)
অতএব, পবিত্র নামাযসহ যাবতীয় ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য ইলমুল ইখলাছ বা ইলমে তাছাউফ অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরয। অর্থাৎ একজন কামিল ওলীআল্লাহ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার নিকট বাইয়াত হয়ে ইলমে তাছাউফ বা তরীক্বত অনুযায়ী ক্বলবী যিকির ও অন্যান্য সবক আদায়ের মাধ্যমে ইখলাছ অর্জন করতে হবে।