খলীফাতুল্লাহ খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, সুলতানুল আরিফীন, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাকিমুল হাদীস, আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার কতিপয় কারামাত মুবারক ও কামালত মুবারক (৩)

অমৌসুমী ফল খাওয়া:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রুহুল্লাহ আলাইহাস সালাম তিনি অমৌসুমী ফল খেতেন। একদিন হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম তা দেখে ফেললেন। এ প্রসঙ্গে কালাম পাকে বর্ণিত আছে-
كُلَّمَا دَخَلَ عَلَيْهَا زَكَرِيَّا الْمِحْرَابَ وَجَدَ عِندَهَارِزْقًا قَالَ يَا مَرْيَمُ أَنَّىٰ لَكِ هَـٰذَا
অর্থ:- হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম তিনি যখনই মিহরাবে উনার (হযরত মরিয়ম আলাইহাস সালাম) নিকট আসতেন তখনই কিছু না কিছু রিযিক (খাবার) দেখতে পেতেন। একদিন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, হে মরিয়ম আলাইহাস সালাম! এগুলো কোথায় পেলেন? তখন কি বললেন?
هُوَ مِنْ عِندِ اللَّـهِ ۖ إِنَّ اللَّـهَ يَرْزُقُ مَن يَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ
অর্থ: এগুলো মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে (হাদিয়া স্বরূপ) এসেছে। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে বেহিসাব রিযিক দান করেন। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৭)

হযরত আসিফ বিন বারখিয়া
রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার চোখের পলকে সিংহাসন আনয়ন
মহান আল্লাহ পাক উনার জলিলুল কদর ও সম্মানিত রসূল হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম। মহান আল্লাহ পাক উনাকে সারা দুনিয়ার কর্তৃত্ব (শাসন ক্ষমতা) দিয়েছেন। তিনি সকল মাখলুকাতের ভাষা জানতেন। হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম উনার প্রধান ও সভাসদগণের বিশেষ ব্যক্তিত্বের নাম মুবারক ছিল আসিফ বিন বারখিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি। যিনি সিদ্দীক তবকার ওলী আল্লাহ ছিলেন। উনার দ্বারা যে কারামত মুবারক প্রকাশ পেয়েছে তা মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে বর্ণনা করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وقَالَ الَّذِي عِندَهُ عِلْمٌ مِّنَ الْكِتَابِ أَنَا آتِيكَ بِهِ قَبْلَ أَن يَرْتَدَّ إِلَيْكَ طَرْفُكَ ۚ
অর্থ: আর (তাদের মধ্যে) যাঁর কিতাবের ইলিম ছিল তথা যিনি ওলী আল্লাহ ছিলেন তিনি (সিংহাসন আনার ব্যাপারে) বললেন, আপনি চোখের পলক ফেলার পূর্বে আমি তা আপনাকে এনে দিব। (পবিত্র সূরা নমল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪০)
হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম তিনি উনার দৃঢ় চিত্ত কথা শুনে খুবই খুশী হলেন। তিনি উনাকে অনুমতি দিলেন। তিনি চোখের পলকে হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম উনার কাছে তা উপস্থিত করলেন। সুবহানাল্লাহ! এটা দেখে হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম তিনি অত্যন্ত খুশি হলেন। আর বললেন-
فَلَمَّا رَآهُ مُسْتَقِرًّا عِندَهُ قَالَ هَـٰذَا مِن فَضْلِ رَبِّي لِيَبْلُوَنِي اَاَشْكُرُ اَمْ اَكْفُرُ
অর্থ: হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম তিনি যখন তা সামনে উপস্থিত বা রক্ষিত দেখলেন, তখন বললেন, ইহা আমার পালনকর্তা মহান রব তায়ালা উনার বিশেষ অনুগ্রহ। তিনি আমাকে পরীক্ষা করেন যে, আমি শুকরিয়া আদায় করি, অথবা না করি।” (পবিত্র সূরা নমল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪০)
সুলতানুল আরিফীন, ইমামুল মুহাদ্দিসীন, হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন- হযরত আসিফ বিন বারখিরা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, আপনি আকাশ পানে দৃষ্টি নিক্ষেপ করুন। তিনি আকাশের দিকে তাকালেন। অতঃপর দৃষ্টি ফিরালেন। আর সাথে সাথে তিনি উনার সামনে সাবার রানী হযরত বিলকিস আলাইহাস সালাম উনার রাজ সিংহাসন স্থাপিত দেখতে পেলেন। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে জালালাইন শরীফ)
বাইতুল মাকদাস থেকে ইয়ামানের সাবা শহরের দূরত্ব এক হাজার মাইলেরও বেশী। এতদূর থেকে এত বড় বিশাল সিংহাসন মহুর্তের মধ্যে হাজির করা স্বাভাবিক নয়। তা অবশ্যই কারামত মুবারক উনার অন্তর্ভূক্ত। সুবহানাল্লাহ!

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট