ফখরুল আউলিয়া আওলাদে রসূল সম্মানিত হযরত নানা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনারই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লখতে জিগার আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি

মুবারক বিলাদত শরীফ: 
মাসের মধ্যে সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস হচ্ছে শাহরুল আ’যম বা শ্রেষ্ঠ। আর দিনের মধ্যে মহিমান্বিত হলো- ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ (সোমবার)। কারণ এ পবিত্র মাসে এবং পবিত্র দিনেই দুনিয়ায় মুবারকে তাশরীফ আনেন আকরামুল আউওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, রহমতুল্লিল আলামীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। আর সেই মহান সুন্নত আদায়ের লক্ষ্যেই, মুবারক কারামত প্রকাশ করে সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাসেরই ৭ তারিখ পবিত্র ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ (সোমবার) পবিত্র বাদ মাগরিব উনার সময় অর্থাৎ সুন্নতী সময় যমীনে মুবারক তাশরীফ আনেন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল খাইর, হাবীবাতুল্লাহ, আমাদের মামদূহ হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মুবারক শৈশব ও কৈশোর কাল: 
উনার মুবারক শৈশব ও কৈশোরকালে উনার বেমেছাল বুযুর্গী, কারামত ও সম্মানের প্রকাশ ঘটে। শিশুসুলভ চঞ্চল আচরণ, অযৌক্তিক হাস্যরস, অপ্রয়োজনীয় কাজ, অনাবশ্যক চিন্তা-খেয়াল থেকে পরিপূর্ণরূপে মুক্ত থেকে এত শিশু বয়স মুবারক থেকেই তিনি সকলের নিকট হয়ে উঠেন এক বিস্ময়কর ধৈর্য ও গাম্ভীর্যের মূর্ত প্রতীক। সুন্নত অনুসরণে উনার জীবন মুবারক-এর প্রথম আমলই ছিল চিন্তা বা মুরাকাবা। আর এখানেও উনার ক্ষণে ক্ষণে কারামত মুবারক উনার প্রকাশ ঘটে।
শিশুবেলা থেকেই সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আওলাদে রসূল, মাহবুবায়ে ইলাহী, হাবীবাতুল্লাহ আমাদের মামদূহ হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা প্রকাশ পেতে থাকে। তিনি যখন কোলের শিশু তখন একদা তিনি উনার সম্মানিত পিতা অর্থাৎ আমাদের হযরত নানা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক কোলে বসা ছিলেন। এমন সময় একজন বুযুর্গ ব্যক্তি সেখানে আসেন। তিনি আমাদের হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে দেখে হযরত নানা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে বলেন: “হে মাওলানা ছাহিব আলাইহিস সালাম! আপনার এ কন্যা সন্তানের চেহারা মুবারক নূরে দীপ্তিমান। উনার সুষ্ঠু তত্ত্বাবধান করবেন, খিদমত মুবারক করবেন। আপনার এই কন্যা সন্তান অনেক উঁচু স্তরের ওলীআল্লাহ হবেন। জগৎময় উনার সুখ্যাতি ও সুনাম ছড়িয়ে পড়বে। উনার হিদায়েতের নূর মুবারক সমগ্র বিশ্বকে আলোকিত করবে। উনার অতুলনীয় রূহানী কুওওয়াত ও বিস্ময়কর প্রভাবে সারা দুনিয়ায় নারীদের মাঝে জাগরণ ঘটবে।” সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত মুবারক ঘটনার পরের আরেকটি ঘটনা, আমাদের হযরত নানা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার বাড়িতে উপস্থিত হলেন অন্য একজন বুযুর্গ ব্যক্তি। সেদিনও ক্বায়িম-মাক্বামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন, উম্মুল খাইর, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত পিতা উনার মুবারক কোলেই বসা ছিলেন। সালাম বিনিময়ের পর আগন্তুক বুযুর্গ ব্যক্তি একই কথা বললেন: “হে মাওলানা ছাহিব আলাইহিস সালাম! আপনার এ শিশু কন্যা সন্তান খালিছ ওলীআল্লাহ হবেন। তিনি হবেন একজন বেমেছাল মর্যাদাসম্পন্না ওলীআল্লাহ। তিনি হবেন যামানার যিনি লক্ষ্যস্থল উনার ছাহিবাতুল মুকাররামা। অন্য কারো সঙ্গেই উনার নিসবাতুল আযীম মুবারক সংঘটিত হবে না। উনার পবিত্র রেহেম শরীফ হতে এমন একজন নেক আওলাদ পাক যমীন মাঝে তাশরীফ আনবেন যিনি হবেন বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবাসম্পন্ন ওলীআল্লাহ। এছাড়া উনার মুবারক রেহেম শরীফ হতে আগত আওলাদ পাক সকলেই হবেন যামানার লক্ষ্যস্থল খালিছ ওলীআল্লাহ।” সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর বুযুর্গ ব্যক্তি আরো বললেন: “এমন মুবারক কন্যা সন্তান উনার সম্মানিত পিতা হয়ে আপনি তুলনাহীন সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত পাঠক-পাঠিকাগণ, আপনারা কি জানেন, উল্লেখিত দুটি ঘটনায় আগন্তুক দু’ব্যক্তি কে? মূলত বুযুর্গ ব্যক্তির ছূরতে আগন্তুক দু’ব্যক্তি ছিলেন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা। (সুবহানাল্লাহ) উনাদের ভবিষ্যদ্বাণী করা বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবাসম্পন্ন ওলীআল্লাহ যিনি, তিনিই হচ্ছেন মহান খলীফাতুল উমাম সাইয়্যিদুনা আমাদের হযরত শাহযাদা হুযূর কিবলা ক্বাবা আলাইহিস সলাতু ওয়াস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহণ:
ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে উনার বুযুর্গ পিতা আলাইহিস সালাম তিনি বার আউলিয়া উনাদের পুণ্যভূমি খ্যাত চট্টগ্রামের একটি বালিকা মাদরাসায় প্রাতিষ্ঠানিক ইলম অর্জনের ব্যবস্থা করেন। যদিও তিনি ভরপুর ইলমে লাদুন্নীসহ জগৎ মাঝে এসেছেন, তবুও প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম অনুযায়ী সেখানে তিনি খাছ শরয়ী পর্দার সাথে অধ্যয়ন শুরু করেন। সে মাদরাসার মুয়াল্লিমা উনারা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করেন যে, তীক্ষè মেধা, নিরবচ্ছিন্ন মনোযোগ, সূক্ষ্ম সমঝ এবং ইলম অর্জনে তিনি সত্যিই বেমেছাল। উনার সুন্নতী আচার-আচরণ মুবারক, অনন্য আদব-শরাফত, সীমাহীন ইলম উনার কারণে মাদরাসার ছাত্রীরা তো অবশ্যই মুয়াল্লিমারাও উনার থেকে অনেক কিছু শিখতে থাকেন।

মুজাদ্দিদী মুবারক জবানে ছানা-ছিফত মুবারক: 
সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউছুল আ’যম, হাবীবুল্লাহ, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র নছীহত মুবারক পেশকালে অনেকবারই বলেছেন বলেন, “তোমাদের হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম এবং উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাদের সরাসরি দায়িমী নিসবতপ্রাপ্ত।” সুবহানাল্লাহ!

ভুবন বিখ্যাত বালিকা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা:
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বালিকাদের জন্য এমন এক সুমহান মাদরাসা প্রতিষ্ঠা ও পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, যে মাদরাসার তা’লীম তরবিয়ত, শিক্ষা-দীক্ষা, সিলেবাস এবং পাঠোন্নতি দুনিয়ার যেকোনো মাদরাসা এমনকি তথাকথিত আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও হার মানিয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
এই মাদরাসার অসংখ্য খুছুছিয়ত রয়েছে। যেমন, প্রত্যেক ছাত্রী ও মুয়াল্লিমাকে হাক্বীক্বী শরয়ী পর্দা করতে হয়, নিয়মিত যিকির করতে হয়, তাহাজ্জুদ নামায নিয়মিত পড়তে হয়, বেশি বেশি সুন্নতের আমল করতে হয়, পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের পবিত্র ইলম অর্জন করার পাশাপাশি জরুরত আন্দাজ দুনিয়াবী ইলম, প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও বিভিন্ন ভাষা শিখতে হয়, নিয়মিত ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হয়। এছাড়াও এই মুবারক মাদরাসার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য যে, প্রতিটি শ্রেণীতে একাধিক মুয়াল্লিমা উনারা তা’লীম পরিচালনা করেন। মুয়াল্লিমাগণ উনাদের কোলের শিশুকে নিয়েই তা’লীম পরিচালনা করতে পারেন। যা বিশ্বের কোনো প্রতিষ্ঠানেই পারে না। এখানেও হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি শিশুর প্রতি মহা ইহসান প্রদর্শন করেছেন। 
রাজারবাগ শরীফ থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে অসংখ্য প্রকাশনা; যা আওলাদুর রসূল, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার অবদান। 
একটা সময় এমন ছিল যখন দুনিয়ার মাঝে শুধুমাত্র সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনিই সুন্নতী পোশাক মুবারক পরিধান করতেন এবং মেয়েদের সুন্নতী আমলসমূহ পালন করতেন। আর কেউ সুন্নতী লিবাস ও আমল সম্পর্কে জানতোও না। তিনি দয়া-দান ইহসান করেই এই উম্মাহ উনাদের মেয়েদেরকে নিজ হাত মুবারক-এ কাপড় কেটে দেখিয়ে সুন্নতী লিবাস বানাতে ও পরতে শিখিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন-দিচ্ছেন সকল সুন্নত মুবারক উনাদের জ্ঞান। যা অবশ্যই উনার খাছ কারামত মুবারক।
মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আখাচ্ছুল খাছভাবে সৃষ্টিলগ্ন থেকেই উনার মাঝে ছহীহ হিদায়েত, প্রগাঢ় ইলম, সূক্ষ্ম সমঝ, অনুপম চরিত্র মাধুর্য, অসীম মুহব্বত-মা’রিফাতসহ সকল গুণ-বৈশিষ্ট্যে হাদিয়া করেছেন।
আওলাদুর রসূল, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান লেখা দ্বারা প্রকাশ করা অসম্ভব, তিনিই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে একমাত্র ব্যক্তিত্বা যিনি প্রতিনিয়ত উম্মাহকে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার বিশুদ্ধ তাফসীর হাদিয়া করেন। নিয়মিত পবিত্র হাদীছ শরীফ শিক্ষা দেন। যা অবশ্যই উনার খাছ কারামত মুবারক।
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরই অন্তর্ভুক্ত হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনিই দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে একমাত্র ব্যক্তিত্বা যিনি দায়েমীভাবে উম্মাহ উনাদেরকে পবিত্র ইলমে তাছাউফ ও পবিত্র ইলমে ফিকাহ শিক্ষা দিচ্ছেন। যা নিঃসন্দেহে উনার খাছ কারামত মুবারক।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট