উশর সংগ্রহ

উশর সংগ্রহ
পবিত্র উশর উনার পরিচয় : পবিত্র ‘উশর’ শব্দখানা আরবী, যা ‘আশরাতুন’ (দশ) শব্দ হতে এসেছেন। উনার আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থ হচ্ছেন- ‘এক দশমাংশ’। আর সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার পরিভাষায়- যমীন থেকে উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য তথা ফল ও ফসলের ১০ ভাগের ১ ভাগ পবিত্র যাকাত হিসেবে আদায় করাকে পবিত্র উশর বলে। আর ২০ ভাগের ১ ভাগ পবিত্র যাকাত হিসেবে আদায় করাকে পবিত্র নিছফু উশর বলে।
পবিত্র উশর সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে একাধিক পবিত্র আয়াত শরীফ বর্ণিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَنْفِقُوْا مِنْ طَيّبَاتِ مَاكَسَبْتُمْ وَمِـمَّا اَخْرَجْنَا لَكُمْ مّنَ الْاَرْضِ.
অর্থ : “তোমরা তোমাদের উপার্জিত হালাল সম্পদ হতে এবং যা আমি তোমাদের জন্য যমীন হতে উৎপন্ন করিয়েছি তা হতে দান করো।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬৭)
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاَتُوْا حَقَّه يَوْمَ حَصَادِه
অর্থ : “ফসল কাটার সময় তার হক (পবিত্র উশর) আদায় করো।” (পবিত্র সূরা আনআম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪১)

ফসল কাটার সময় তার হক (উশর) আদায় করতে হবে ।
আনজুমান ভিত্তিক উশর সংগ্রহ করতে হবে। যাকাতের মতই উশর ফরয।
উশর আদায় না করলে সমস্ত ফল-ফসলাদি নষ্ট হয়ে যাবে।
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِيْمَا سَقَتِ السَّمَاءِ وَالْعُيُوْنِ اَوْ كَانَ عَثَرِيًّا اَلْعُشْرُ وَمَا سُقِىَ بِالنَّضْحِ نِصْفُ الْعُشْرِ
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যাতে অর্থাৎ যে যমীনকে আসমান অথবা প্রবাহমান কূপ পানি দান করে অথবা যা নালা দ্বারা সিক্ত হয়, তাতে উশর অর্থাৎ দশ ভাগের এক ভাগ আর যা সেচ দ্বারা সিক্ত হয়, তাতে অর্ধ উশর অর্থাৎ বিশ ভাগের এক ভাগ।” (পবিত্র বুখারী শরীফ)

⚠️সাবধান ⚠️সাবধান ⚠️সাবধান

⚠️সাবধান ⚠️সাবধান ⚠️সাবধান

প্রশ্ন- 
যেহেতু সৌদি আরবও বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশ নিচ্ছে, তাই কেউ যদি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাকে সমর্থন না করে সৌদির ফুটবল টিমকে সমর্থন করে সৌদি আরবের কালেমা শরীফ খচিত পতাকা উড়ায় তবে কি সেটা হালাল হবে ?
.
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন -
.
আসমান-যমীনে কোন কিছু আমি খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করিনি। মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ফতওয়া অনুযায়ী- ফুটবল ও ক্রিকেটসহ সমস্ত প্রকার খেলাধুলাই হারাম। খেলাধুলা করা, খেলার
জন্য খুশি করাসহ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে খেলাকে সমর্থন করা সবই শরীয়তে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। অর্থাৎ কাট্টা হারাম ও কুফরী।
নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!

#90DaysMahfil | sunnat.info |

পালোয়ানদের সর্দার হয়ে গেলেন আল্লাহওয়ালাদের সর্দার

পালোয়ানদের সর্দার হয়ে গেলেন আল্লাহওয়ালাদের সর্দার

একদিন একজন লোক আসলেন। উনার চেহারা সুরত দেখে উনাকে কুস্তিগীর বলে মনে হচ্ছিলো না। উনাকে সবাই কুস্তি লড়তে নিরুৎসাহিত করলো; কিন্তু তিনি বললেন, যেহেতু স্বর্ণমুদ্রা দেয়া হবে, আর কুস্তির সুযোগও দেয়া হয়েছে তাই তিনি এসেছেন। কুস্তির দিন তারিখ, স্থান ঠিক হলো। অনেক দিন পর কুস্তি হবে এ জন্য বহু লোক জমা হলো। সেই ব্যক্তি এবং বাদশাহর পালোয়ান মুখোমুখি হলেন। দেখা গেল, কুস্তি শুরুর পূর্বে সেই ব্যক্তি পালোয়ানের কানে কানে কিছু কথা বললেন। পালোয়ান উনার কথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। উনার প্রদর্শনী থেমে গেল। সবাই খুব আশ্চর্য হলো এতে। তারপর কুস্তি শুরু হলে দেখা গেল, সেই ব্যক্তি চোখের পলকে পালোয়ানকে মাটিতে শুইয়ে তার সিনার উপর চড়ে বসলেন, পরপর তিনবার। দেখে মনে হচ্ছিলো পালোয়ানের নড়ারও কোন ক্ষমতা নেই। সেই ব্যক্তিকে জয়ী ঘোষণা করা হলো। তিনি পুরস্কার নিয়ে চলে গেলেন।
বাদশাহ তাজ্জব হয়ে গেল। পালোয়ান এসে বাদশাহকে বললেন যে, সে আর কখনও কুস্তি করবে না। বাদশাহ পালোয়ানকে জিজ্ঞেস করলো, সে পরাস্ত হলো কিভাবে? পালোয়ান বললেন, আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন কুস্তি শুরু করার পূর্বে সেই ব্যক্তি আমাকে কানে কানে কিছু কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি একজন আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, অমুক স্থান থেকে এসেছেন। উনার এলাকায় তিনি প্রধান। সেখানে উনার অনেক বংশধর আছেন। উনারা অনেক স্বচ্ছল ছিলেন, কিন্তু ব্যবসা মন্দার কারণে অনেক ঋণ হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় উনার পরিবারের সম্মান ইজ্জত রক্ষা করা কঠিন হয়ে গেছে। তিনি বাদশাহর ঘোষণা শুনে ভেবেছেন, পুরস্কার যদি পাওয়া যায় তাহলে ঋণ শোধ করে দেয়া যাবে। তিনি কোনো কুস্তিগীর নন, কখনও কুস্তি করেননি, কুস্তির নিয়মকানুনও জানেন না। তিনি বলেছেন ‘হে পালোয়ান! তুমি অনেক বড় পালোয়ান এবং যুবক, আর আমার বয়স হয়েছে। তোমার এই শক্তি কিন্তু সবসময় থাকবে না। কিন্তু আমি যেহেতু আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাই তুমি যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দউনার সম্মানার্থে আমার কাছে পরাজিত হও, তাহলে আমি পুরস্কার পাবো আর আমাদের শত শত লোকের ইজ্জত রক্ষা হবে। আমরা তোমার জন্য দোয়া করবো। আর মহান আল্লাহ পাক ও উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা তোমাকে ইহকাল ও পরকালে কামিয়াবী দিবেন; সেটাই তোমার জন্য স্থায়ী হবে।’ আমি ভাবলাম, আমি কি করবো? আমার এত নাম যশ খ্যাতি! কিন্তু আসলেই এগুলো চিরস্থায়ী না। কিন্তু আমি এই ব্যক্তির সম্মানার্থে যদি পরাজিত হই, তাহলে আমার নাম যশ খ্যাতি নষ্ট হলেও মহান আল্লাহ পাক ও উনার মহাসম্মানিত রসূল রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি রেযামন্দি মুবারক হাছিল করতে পারবো। তাই আমি ইচ্ছা করেই পরাজিত হয়েছি এবং আর কখনও কুস্তি করবো না।” বাদশাহ বললো, ‘সেই ব্যক্তি যে আসলেই আওলাদে রসূল তার কোনো প্রমাণ তো তোমার কাছে ছিল না।’ পালোয়ান বললো না, কিন্তু আমি উনাকে বিশ্বাস করেছিলাম।
সেই রাতে পালোয়ান স্বপ্নে দেখলো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবীইয়ীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক এনেছেন সুবহানাল্লাহ! তিনি পালোয়ানকে বললেন, ‘হে জুনায়েদ! তুমি আজকে যে কাজটা করেছো; আমার সম্মানার্থে তোমার সব মান-সম্মান বিসর্জন দিয়েছো, তাতে আমি তোমার উপর সন্তুষ্ট হয়ে গেছি। সেই ব্যক্তি আসলেও আমার আওলাদ এবং ঋণগ্রস্ত। তুমি তো পালোয়ানদের সর্দার ছিলে তাই আমিও তোমাকে “সাইয়্যিদুত ত্বয়িফা” অর্থাৎ আল্লাহওয়ালাদের সর্দার করে দিলাম।’ সুবহানাল্লাহ! পালোয়ান ঘুম থেকে উঠে তওবা ইস্তেগফার করলেন, শুকরিয়া আদায় করলেন। বাদশাহকে জানালেন যে, তিনি ঠিক কাজই করেছিলেন। এই পালোয়ান সত্যিই পরে রিয়াজত-মাশাক্কাত করে মহান আল্লাহ পাক উনার অনেক বড় ওলী হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

#90DaysMahfil 
sm40com
sunnat.info

আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে হিফাজত করবেন ।

আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে হিফাজত করবেন ।

(এক) মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সম্মান মুবারক।
(দুই) মহাসম্মানিত আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনাদের সম্মান মুবারক।
(তিন) মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সম্মান মুবারক।

#90DaysMahfil 
sm40com
sunnat.info

ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধান সংক্রান্ত কিছু দলীল-

ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধান সংক্রান্ত কিছু দলীল-
ইমামাহ বা পাগড়ীর পরিমাপঃ আল্লাহ পাক-এর হাবীব, আখিরী রসল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিন প্রকার মাপের পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন। বাড়ী বা বাসায় অবস্থান করাকালীন সময়ে তিন হাত পরিমাপের পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন। বাড়ী বা বাসার বাইরে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে ব্যবহার করতেন ৭ হাত। যার প্রস্থ ছিল এক হাত থেকে ২ হাত। আর বিশেষ বিশেষ দিন তথা ঈদ, জুমুয়া ইত্যাদিতে ১২ হাত পরিমাপের পাগড়ী পরতেন।

দলীল-
√ আনওয়ারুল মাহমুদ-২/৪৪২
√ উরফুশ শাজী-১/৩০৪,
√ আওনুল মা’বুদ-৪/৯৬,
√ তুহফাতুল আহওয়াজী৫/৪১৪,
√ তা’লিকুছ ছবীহ-৪/৩৮৯,
√ মিরকাত-৮/২৫০,
√ জামউল ওয়াসাইল-১/২০৭,
√ খছাইলে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৯১,
√ আখলাকুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-১৮১

পাগড়ীর শামলা ও তার পরিমাপঃ ইমামাহ বা পাগড়ী বাধার পর পাগড়ীর যে অংশ পিছনে পিঠের উপর ঝুলিয়ে রাখা হয় তাকে শামলা বলে। শামলাসহ পাগড়ী পরা সুন্নত। ইহা ব্যতীত পাগড়ী পরা শিয়া ও শিখদের আলামত। অর্থাৎ শিয়া ও শিখ সম্প্রদায় শামলা ছাড়া পাগড়ী পরে। আর আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের মতে, শিয়া ও শিখরা মুসলমান নয়।
পাগড়ীর শামলা হবে এক বিঘত বা অর্ধ হাতের কিছু বেশি এবং এক হাতের কিছু কম। তবে চার আঙ্গুল পরিমাণের কম ও এক হাতের বেশি হওয়া মাকরূহ। আল্লাহ পাক-এর হাবীব, আখিরী রসুল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’কাঁধের মাঝামাঝি অর্থাৎ পিঠের উপর ঝুলিয়ে রাখতেন। তবে কখনো কখনো ডান কাধের উপর দিয়ে সামনে রাখতেন। কিন্তু; শামলা বাম কাধের উপর দিয়ে সামনে রাখা বিদয়াত।

দলীল-
√ মুযাহিরে হক্ব-৩/৫৩৪,
√ আশয়াতুল লুময়াত-৩/৫৪৫,
√ আরিদ্বাতল আহওয়াযী-৭/২৪৩,
√ আওনুল মা’বুদ-৪/৯৫,
√ তুহফাতল আহওয়াযী-৫/৪১১,
√ তানযীমুল আশতাত-৪/১৬৭

পাগড়ীর রং : সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণত সাদা, কালো ও সবুজ রংয়ের পাগড়ী মুবারক পরিধান করতেন। সবচেয়ে বেশি পরতেন কালো। সবুজ, কালো রংয়ের তুলনায় একট কম পরতেন। আর সাদা তার চেয়ে আরো কম সময় পরতেন।”

দলীল-
√ মুছান্নিফে ইবনে আবী শাইবাহ৮/২৪১,
√ যরকানী-৬/২৫৭,
√ মুসলিম শরীফ-১/৪৪০,
√ শরহে নববী-৫/১৩৩,
√ শরহুল উবাই ওয়াস সিনসী-৪/৪৬৭,
√ আবু দাউদ শরীফ-২/২০৯,
√ বযলুল মাজহুদ-৬/৫১,
√ আওনুল মা’বদ-৪/৯৫,
√ নাসায়ী শরীফ-২/২০০০,
√ ইবনু মাযাহ-২৬৪,
√ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল-৪/৩০৭,

পাগড়ীর কতিপয় আদব বা সুন্নত ত্বরীক্বাঃ
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম- বলে পাগড়ী পরা সুন্নত।

দলীল-
√ যুরকানী-৬/২০৮

পাগড়ী সুতি কাপড়ের হওয়া সুন্নত। ওযুর সাথে পাগড়ী বাধা সুন্নত। ক্বিবলা মুখী হয়ে দাড়িয়ে পাগড়ী বাঁধা সুন্নত। পাগড়ীর শামলা-এর মাথা মুখে কামড় দিয়ে ধরে পাগড়ী বাধা সুন্নত। টুপির উপর পাগড়ী পরা সুন্নত। মুসলমানগণ টুপির উপর পাগড়ী পরিধান করে। আর মুশরিকরা টুপি ছাড়া পাগড়ী পরিধান করে।

দলীল-
√ মিরকাত-৮/২৫০,
√ জামউল ওয়াসায়িল-১/২০৭,
√ আল মাদখাল- ১/১০৬,
√ হুজ্জাতত্ তাম্মাহ-৫৬,
√ আবু দাউদ শরীফ-২/২০৯,
√ তিরমিযী শরীফ-১/২১০,
√ মিশকাত শরীফ৩৭৪,

পাগড়ী বাধার সময় সিজদার স্থানকে উম্মক্ত রাখা আবশ্যক। কারণ, আমাদের হানাফী মাযহাব মতে পাগড়ীর প্যাঁচের উপর সিজদা করা মাকরূহ। ”

দলীল-
√ মছান্নাফ লি আব্দির রাজ্জাক-১/৪০১

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাগড়ী ই’তিজার করতে নিষেধ করেছেন। ই’তিজার হচ্ছে পাগড়ী গোলাকার করে বেধে মাথার উপরিভাগকে খোলা রাখা। যা মাকরূহের অন্তর্ভক্ত। ”

দলীল-
√ বাদাইউস সানায়ে-১/২১৬,
√ আলমগীরী-১/১০৬,
√ খলাছাতল ফতওয়া-১/৫৭

উত্তম আচরণ

উত্তম আচরণ
উত্তম আচরণ
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
এক বৃদ্ধা আপনমনে গজগজ করতে করতে তার বাক্স পেটরা গুছাচ্ছে আর রাগে দুঃখে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে কাফিরদেরকে যেসব এলোমেলো কথা বলতে শুনেছিল, তাই আওড়াচ্ছিল।

যখন মুসলমানগণ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক দিক নির্দেশনায় পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় করেছেন তখন অনেক কাফির‌ই পবিত্র মক্কা শরীফ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলো। যদিও কাফিরদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে, তবুও অনেকে নিরাপত্তার দিক থেকে আশ্বস্ত হতে পারলো না। তেমনই ভেবে সেই বৃদ্ধাও চলে যেতে মনঃস্থির করেছে। কিন্তু এই বয়সে একাকী দেশান্তরী হওয়া কি সোজা কথা! সেই পথ ধরে আসছিলেন স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। বৃদ্ধাকে একাকী কথা বলতে দেখে তিনি তার নিকটে গেলেন, তার খোঁজখবর নিলেন। বৃদ্ধা উনাকে চিনতো না। সে তার অবস্থা উনাকে খুলে বললো। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্যই যে তাদের দেশত্যাগ করতে হচ্ছে তাও জানালো। তিনি সব শুনে বৃদ্ধাকে সাহায্য করতে চাইলেন। বৃদ্ধা রাজি হলে তার মালপত্রগুলো তিনি বয়ে নিয়ে চললেন। বৃদ্ধা কিন্তু সারা রাস্তা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকের খিলাফ কথা বলতে বলতেই গেলো। তারপর শহরের কিনারে আসার পর সে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই ইহসান মুবারকের শুকরিয়া আদায় করে উনার পরিচয় জানতে চাইলো। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, 'তুমি যার ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছো, আমিই সেই ব্যক্তি!” সুবহানাল্লাহ! বৃদ্ধা এবার তার ভুল বুঝতে পারলো। সে বুঝলো, কাফিররা উনার শান মুবারকে যা প্রচার করেছিল তা নিতান্তই মিথ্যা, বানোয়াট।

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকে উত্তম আচরণ শিক্ষা দিয়েছেন। ভদ্র মানুষের সাথে ভদ্র আচরণ করাটাই স্বাভাবিকতা; কিন্তু তা উত্তম আচরণ নয়। উত্তম আচরণ হলো, বিরূপ ব্যবহার পেয়েও বিনিময়ে উত্তম ব্যবহার করা। সুবহানাল্লাহ!

নিরাশ্রয়ের আশ্রয়

নিরাশ্রয়ের আশ্রয়
নিরাশ্রয়ের আশ্রয়
==================

এক ঈদের দিনে পবিত্র মদীনা শরীফের ঘরে ঘরে আনন্দ হচ্ছিলো। মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের জামায়াত শেষে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদেরকে নিয়ে বাড়ী ফিরছিলেন। পথে তিনি দেখলেন মলিন কাপড় পরে, নিরানন্দ মুখে একটি ছেলে মাঠে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এগিয়ে গেলেন ছেলেটির কাছে। জিজ্ঞেস করলেন, “বাবা, তুমি কাঁদছো কেন?” উত্তরে ছেলেটি বলল, “হুযুর! আমি মাতৃকোলে আসার অনেক আগেই আমার পিতার ইন্তেকাল হয়েছে। শৈশবে মা তিনিও ইন্তেকাল করেছেন। আজ এই ঈদের দিনে আমাকে নতুন জামা কাপড় দেয়ার কেউ নেই। কে আমাকে কোলে তুলে নিয়ে আনন্দ করবে? কে আমাকে সান্ত্বনা দিবে?"

এতিম ছেলেটির কথাগুলো শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকে কোলে তুলে নিলেন এবং বললেন, “বাবা, তোমার মতো আমার মা-বাবা উনারাও আমার শৈশবেই মহান আল্লাহ পাক উনার দীদারে চলে গিয়েছেন। আজ থেকে আমাকে তোমার পিতা, উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে তোমার মা এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে তোমার বোন বলে মনে করো।” এই বলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছেলেটির কপালে চুম্বন করলেন এবং সাথে করে নিয়ে হুজরা শরীফে পৌঁছলেন। উম্মুল মু'মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে ডেকে বললেন, “হে হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম! দেখুন, আপনার জন্য একটি ছেলে নিয়ে এসেছি। আপনি তাকে আপন ছেলের মতো মনে করে লালন-পালন করুন।”

উম্মুল মু'মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি ছেলেটিকে আদর করে কোলে তুলে নিলেন। নিজের হাত মুবারকে গোসল করিয়ে দিলেন, নতুন জামা-কাপড় পরালেন এবং খেতে দিলেন। নিজের ছেলের মতোই ছেলেটিকে লালন-পালন করতে লাগলেন। আর এভাবেই নিরাশ্রয় ছেলেটি আশ্রয় খুঁজে পেল যিনি রহমাতুল্লিল আলামীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুজরা শরীফে। সুবহানাল্লাহ!


#90DaysMahfil l sm40com l sunnat.info

পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ’ কেন বলা হয় তার দলীল।

পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ’ কেন বলা হয় তার দলীল।
পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ’ কেন বলা হয় তার দলীল।

আমরা জানি মুসলমানদের জন্য অন্যতম দুই দিন হলো ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। এ দুই দিন ঈদের দিনও বটে। এ দুই ঈদ ছাড়াও আরো ঈদ আছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটা ঈদের দিন হলো পবিত্র জুমুয়ার দিন। হাদীছ শরীফে আছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ هٰذَا يَوْمُ عِيْدٍ جَعَلَهُ اللهُ لِلْمُسْلِمِيْنَ فَمَنْ جَاءَ اِلَى الْـجُمُعَةِ فَلْيَغْتَسِلْ وَاِنْ كَانَ طِيْبٌ فَلْيَمَسَّ مِنْهُ وَعَلَيْكُمْ بِالسّوَاكِ‏.‏
অর্থ : “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এই দিনকে মুসলমানদের জন্য ঈদের দিনরূপে নির্ধারণ করেছেন। অতএব যে ব্যক্তি জুমুআর নামায আদায় করতে আসবে, তিনি যেন গোসল করে এবং সুগন্ধি থাকলে তা শরীরে লাগায়। আর মিসওয়াক করাও কর্তব্য।” (ইবনে মাজাহ শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ১০৯৮, আল্ মু’জামুল আওসাত লিত্ ত্ববারানী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৭৩৫৫)

এ ছাড়া হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
অর্থ : “হযরত উবাইদ বিন সাব্বাক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক জুমুআর দিনে ইরশাদ মুবারক করেন, এ পবিত্র জুমআর দিন হচ্ছে এমন একটি দিন, যে দিনকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র ঈদের দিন সাব্যস্ত করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (মুয়াত্তা মালিক শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ১৪৪, ইবনে মাজাহ শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ১১৯৮, মা’য়ারিফুস সুনান ওয়াল আছার বায়হাক্বী শরীফ : হাদীছ শরীফ ১৮০২, মুসনাদে শাফিয়ী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ২৬৮, আল্ মু’জামুল আওসাত লিত্ ত্ববারানী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৩৪৩৩)

জানা দরকার এ দিনের বৈশিষ্ঠ কি। কেন এ দিন ঈদের দিন হলো-

হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَوْسِ بْنِ اَوْسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِيّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ‏ اِنَّ مِنْ اَفْضَلِ اَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْـجُمُعَةِ فِيْهِ خُلِقَ اٰدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَفِيْهِ قُبِضَ.‏
অর্থ : “হযরত আউস ইবনে আউস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদের দিনগুলোর মধ্যে উত্তম দিন হচ্ছে পবিত্র জুমুআর দিন। এ দিনে আবুল বাশার হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সৃষ্টি হয়েছেন এবং এ দিনেই তিনি পবিত্র বিছালী শরীফ গ্রহন করেছেন।” (নাসায়ী শরীফ শরীফ : কিতাবুল জুমুয়া : হাদীছ শরীফ নং ১৩৮৫, মুসলিম শরীফ : কিতাবুল জুমুয়া, হাদীছ শরীফ নং ৮৫৫, তিরমিযী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৪৯১, মুসনাদে আহমদ শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৮৯৫৪, ইবনে মাজাহ শরীফ : হাদীছ শরীফ ১৭০৫, আবূ দাঊদ শরীফ : কিতাবুছ ছলাত, হাদীছ শরীফ নং ১০৪৭, ইবনে খুজায়মা শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ১৬৩২)

এ হাদীছ শরীফ থেকে আমরা জানতে পারলাম আবুল বাশার হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টি ও আগমনের কারনে জুমুয়ার দিন ঈদের দিন।

এখানেই শেষ নয়, ‘জুমুয়ার দিন’ দিন শুধু ঈদের দিনই নয় বরং অন্যান্য দিনের চাইতেও শ্রেষ্ঠ দিন বা হাদীছ শরীফের ভাষায় ‘সাইয়্যিদুল আইয়াম’ ।

হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـي لُبَابَةَ بْنِ عَبْدِ الْمُنْذِرِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰـى عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ يَوْمَ الْـجُمُعَةِ سَيّدُ الاَيَّامِ وَاَعْظَمُهَا عِنْدَ اللهِ وَهُوَ اَعْظَمُ عِنْدَ اللهِ مِنْ يَّوْمِ الاَضْحٰى وَيَوْمِ الْفِطْرِ فِيْهِ خَـمْسُ خِلَالٍ خَلَقَ اللهُ فِيْهِ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَاَهْبَطَ اللهُ فِيْهِ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِلَى الْأَرْضِ وَفِيْهِ تَوَفَّى اللهُ حَضْرْتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَفِيْهِ سَاعَةٌ لَا يَسْأَلُ اللهَ فِيْهَا الْعَبْدُ شَيْئًا اِلَّا اَعْطَاهُ مَا لَـمْ يَسْأَلْ حَرَامًا وَفِيْهِ تَقُوْمُ السَّاعَةُ مَا مِنْ مَلَكٍ مُّقَرَّبٍ وَلَا سَـمَاءٍ وَلَا اَرْضٍ وَلَا رِيَاحٍ وَلَا جِبَالٍ وَلَا بَـحْرٍ اِلَّا وَهُنَّ يُشْفِقْنَ مِنْ يَّوْمِ الْـجُمُعَةِ‏.
অর্থ : “হযরত আবূ লুবাবা ইবনে আব্দুল মুনযির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পবিত্র জুমআ শরীফের দিন সকল দিনের সাইয়্যিদ (সাইয়্যিদুল আইয়াম) এবং সকল দিন অপেক্ষা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিক শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত। এদিনটি পবিত্র ঈদুল আদ্বহার দিন ও পবিত্র ঈদুল ফিতরে দিন অপেক্ষাও মহান আল্লাহ পাকের নিকট অধিক শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত।

এ দিনটিতে পাঁচটি (গুরুত্বপূর্ণ) বিষয় রয়েছে- (১) এ দিনে মহান আল্লাহ পাক তিনি আবুল বাশার হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করেছেন, (২) এ দিনে উনাকে যমীনে প্রেরণ করেছেন, (৩) এ দিনে তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহন করেছেন, (৪) এ দিনটিতে এমন একটি সময় রয়েছে, যে সময়টিতে বান্দা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কিছু চাইলে তিনি অবশ্যই তাকে তা দান করেন, যে পর্যন্ত না সে হারাম কিছু চায় এবং (৫) এ দিনেই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। এমন কোন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম নেই, আসমান নেই, যমীন নেই, বাতাস নেই, পাহাড় নেই, সমুদ্র নেই, যে জুমুআর দিন সম্পর্কে ভীত নয়।” (ইবনে মাজাহ শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ১১৩৭, আল্ মু’জামুল কবীর লিত্ ত্ববারানী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ৪৫১১, বায়হাক্বী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ২৯৭৩)

অর্থাৎ দেখা গেলো জুমুয়ার দিন শুধু ঈদের দিনই নয় বরং ‘সাইয়্যিদুল আইয়াম’ বা অন্যান সাধারন দিন সমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন। কারন সমূহের অন্যতম হচ্ছে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টি, আগমন ও বিছাল।
তাহলে যিনি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনারও রসূল, সাইয়্যিদুল মুসরালিন, ইমামুল মুরসালিম হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের দিনটা কি হবে?
সেটা কি গুরুত্ব পাবে না? সেট কি শ্রেষ্ঠ দিন হবে না?
হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার আগমনের জন্য জুমুয়ার দিন যদি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার চাইতে বড় ঈদের দিন হয়, হাদীছ শরীফের ভাষায় ‘সাইয়্যিদুল আইয়াম’ হয় তাহলে সৃষ্টি জগতের সবার রসূল হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উনার আগমন বা বিলাদত শরীফের দিন ও তারিখ কি “সাইয়্যিদুল আইয়াদ” বা শ্রেষ্ঠ ঈদ হবে না?

#90DaysMahfil

২৪ ঘন্টা সদা সর্বদা নবীজীর ধ্যানে খেয়ালে স্মরনে থাকতে হবে।

২৪ ঘন্টা সদা সর্বদা নবীজীর ধ্যানে খেয়ালে স্মরনে থাকতে হবে।
২৪ ঘন্টা নবীজীর প্রতি দরূদ শরীফ পাঠ করলেই সকল নেক মকছুদ পূর্ণ হবে, এবং জীবনের সকল গুনাহ খতা ক্ষমা হবে। অর্থাৎ সদা সর্বদা নবীজীর ধ্যানে খেয়ালে স্মরনে থাকতে হবে। 
সহীহ হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে,

قَالَ أُبَىٌّ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُكْثِرُ الصَّلاَةَ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلاَتِي فَقَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ الرُّبُعَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ النِّصْفَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ صَلاَتِي كُلَّهَا ‏.‏ قَالَ ‏"‏ إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ ‏.‏

হযরত উবাই ইবনু কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি তো খুব অধিক হারে আপনার প্রতি দরুদ শরীফ পাঠ করি। আপনার প্রতি দরুদ পাঠের জন্য আমি আমার সময়ের কতটুকু খরচ করবো? তিনি বললেন, আপনি যতক্ষণ ইছা করুন। আমি বললাম, এক-চতুর্থাংশ সময়? তিনি বললেন, আপনি যতটুকু ইচ্ছা করুন, তবে এর চেয়ে অধিক পরিমাণে পাঠ করতে পারলে এতে আপনারই ভালো হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি কি অর্ধেক সময় দরুদ পাঠ করবো? তিনি বললেন, আপনি যতক্ষণ চান, যদি এর চেয়েও বাড়াতে পারেন সেটা আপনার জন্যই কল্যাণকর। আমি বললাম, তাহলে দুই-তৃতীয়াংশ সময় দরুদ শরীফ পাঠ করবো? তিনি বললেন, আপনি যতক্ষণ ইচ্ছা করুন, তবে এর চেয়েও বাড়াতে পারলে আপনারই ভাল। আমি বললাম, তাহলে আমার পুরো সময়টাই (২৪ ঘন্টা) আপনার দরুদ পাঠে কাটিয়ে দিব? তিনি বললেন, যদি আপনি এরূপ করতে পারেন, তাহলে আপনার সমস্ত নেক মাক্বছূদগুলো পূর্ণ করে দেয়া হবে এবং আপনার সমস্ত গুনাহখতাগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।"
(দলীল- মিন হাদীছু ইমাম ছুফিয়ান ইবনে সাঈদ আছছাওরী ২৪, মসুনাদে আব্দ ইবনে হুমাইদ ১৭০, তিরমিযী শরীফ ২৪৫৮, মুসতাদরাক আলাছ ছহীহাইন ৩৫৭৮, শুয়াবুল ঈমান বায়হাকী ১৪১৮, মিছবাহুছ সুন্নাহ লিল বাগবী ৬৬১, তারীখে মাদীনাতু দিমাষ্ক ৭/৩৩১)
হাদীছ শরীফ বর্ণনা করে ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ এই হাদীছ শরীফখানা হাসান। (তিরমিযী ৪/২১৮)
ইমাম হাকিম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ وَلَمْ يُخْرِجَاهُ এই পবিত্র হাদীছ শরীফের সনদ সহীহ, যদিও ইমাম বুখারী মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেনি। (মুসতাদরাক আলাছ ছহীহাইন ২/৪৫৭)
ইমাম যাহাবী মুসতাদরাকের তাহকীক করতে গিয়ে হাদীছ শরীফ সম্পর্কে বলেন, صحيح হাদীছ শরীফখানা সহীহ। (মুসতাদরাক আলাছ ছহীহাইন ২/৪৫৭)
ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি হাদীছ শরীফ উল্লেখ করে «حديث حسن» হাদীছ শরীফখানা হাসান বলেছেন (রিয়াদুছ ছলেহীন ১৯৫ পৃষ্ঠা)
এছাড়া নাসিরুদ্দীন আলবানীও হাদীছ শরীফখানা হাসান ছহীহ হিসাবে তার তাহকীকে উল্লেখ করেছে।
সূতরাং এই পবিত্র হাদীছ শরীফখানা থেকে প্রমাণিত হলো, সদা সর্বদা নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিকিরে, উনার স্মরনে মশগুল থাকাই হচ্ছে নিয়ামত লাভের অন্যতম মাধ্যম। অথচ আজকাল খারেজী আক্বীদার মানুষ বলে উনার আলোচনা বেশি করা নাকি বিদয়াত। 

আল্লাহ পাক ফিতনাবাজ খারেজী সম্প্রদায় থেকে আমাদের হিফাজত করুন। আমাদের সবাইকে আপনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যিকিরে মশগুল থাকার তৌফিক দান করুন।