হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কুরবানী ( পর্ব-১ )


হযরত আবুল বাশার ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে উনার আওলাদ হযরত হাবীল আলাইহিস সালাম উনার ও কাবীলের কুরবানীর পর থেকে আবুল মুসলিমীন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্ত কুরবানী চলতে থাকে। হযরত আবুল মুসলিমীন হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ৮৬ বছর বয়স মুবারক-এ মহান রব তায়ালা উনার নিকট সৎকর্মশীল আওলাদের জন্য দুআ করেন। ফলে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে একজন ধৈর্যশীল আওলাদের সুসংবাদ দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

رَ‌بِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِـحِينَ ◌ فَبَشَّرْ‌نَاهُ بِغُلَامٍ حَلِيمٍ ◌

অর্থ : “(হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দু‘আ করলেন) হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে একজন সৎকর্মশীল আওলাদ দান করুন। অতঃপর আমি উনাকে একজন অতি ধৈর্যশীল আওলাদের সুসংবাদ দিলাম।” (পবিত্র সূরা আছ-ছফফাত শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০০-১০১)

সুসংবাদটি ছিল হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে, কেননা তিনি ছিলেন হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার প্রথম আওলাদ। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১/১৫৭-১৫৮)

অতঃপর যখন হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত পিতা হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে হাঁটার মত বয়স মুবারকে উপনীত হলেন অর্থাৎ নিজেই নিজের দেখাশোনা করতে পারতেন। 

এ রকম একটা অবস্থা যখন আসল, তখন হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র ৭-৯ যিলহজ্জ শরীফ পর পর ৩ দিন স্বপ্ন মুবারক দেখলেন যে, উনাকে উনার প্রিয় বিষয় কুরবানী করার আদেশ মুবারক দেয়া হচ্ছে।

মুখতালিফ রেওয়ায়েত, এক বর্ণনায় রয়েছে, স্বপ্ন মুবারক দেখার পর তিনি প্রত্যেক দিনই ১০০টি করে উট কুরবানী মুবারক করেন। আরেক বর্ণনায় রয়েছে, প্রথম দিন অর্থাৎ ৭ তারিখে ১০০টি মেষ বা দুম্বা, ৮ তারিখে অর্থাৎ ইয়াওমুত তারবিয়া বা চিন্তার দিবসে ১০০টি গরু ও ৯ তারিখে অর্থাৎ ইয়াওমুল আরাফাহ ১০০টি উট কুরবানী মুবারক করেন। কিন্তু ১০ তারিখে অর্থাৎ ইয়াওমুন নহর হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার প্রাণপ্রিয় আওলাদ হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী করার জন্য স্বপ্নযোগে স্পষ্টরূপে আদিষ্ট হলেন।

মূলত হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্বপ্ন মুবারক হচ্ছে ওহী মুবারক। সুতরাং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার প্রিয় আওলাদ হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী করার আদেশের মাধ্যমে মূলত সকল উম্মতের জন্য পরীক্ষার মানদ- স্থাপন করলেন।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট