জাওয়াব : মসজিদ ভাঙ্গার অনুমতি দেয়ার অধিকার মাখলূক্বাতের কারো নেই। কারণ মসজিদ হচ্ছে যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র ঘর। এ পবিত্র ঘর উনার মালিক হচ্ছেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই। কাজেই মহান আল্লাহ পাক উনার মালিকানাধীন পবিত্র ঘর মসজিদ সেটা সৃষ্টি তথা জিন ইনসানের পক্ষে কি করে ভাঙ্গা সম্ভব হতে পারে এবং ভাঙ্গার অনুমতি কি করে দিতে পারে? এসবই কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত এবং ঈমান-আমল বরবাদ হওয়ার ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ। নাউযুবিল্লাহ!
প্রকৃতপক্ষে মসজিদের কমিটি, মুতাওয়াল্লী, মসজিদের খতীব ছাহেব ও মসজিদের ইমাম ছাহেব উনারা কেউই মসজিদের মালিক নন। উনারা কেবল মসজিদ সুষ্ঠভাবে ও শরীয়ত সম্মতভাবে পরিচালনাকারী মাত্র এবং উনাদেরকে মসজিদ পরিচালনা বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জিম্মাদার বানানো হয়েছে।
উনাদের এই জিম্মাদারী হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আমানত স্বরূপ। এই আমানত পালনে ত্রুটি করলে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অবশ্যই জবাবের সম্মুখীন হতে হবে এবং কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
َلَا كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ
অর্থ : “সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই রক্ষক এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার রক্ষিত বা দায়িত্বাধীন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)
কাজেই, মসজিদ কিভাবে টিকে থাকবে, মসজিদের হুরমত বা সম্মান ও পবিত্রতা কিভাবে বজায় থাকবে সেই জিম্মাদারী পালন করাই হচ্ছে উক্ত ব্যক্তিবর্গ উনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
কাজেই, উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ যেহেতু মসজিদের মালিক নন, তাই উনাদের কারোই মসজিদ ভাঙ্গার অনুমতি দেয়ার অধিকার নেই বা রাখেন না। কারণ প্রত্যেকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার খাদিমের অন্তর্ভুক্ত।
এই জন্য এখনও পবিত্র কা’বা শরীফ ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনাদের পরিচালনা ও তদারকীতে নিয়োজিত যারা রয়েছে তারাও খাদিম পরিচয় দিয়ে থাকে। যেমন তারা বলে থাকে ও লিখে থাকে, খাদিমুল হারামাইনিশ শারীফাইন। তারা কেউই কিন্তু মালিকানা দাবী করে না।
কাজেই, বান্দা কেবলমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর মসজিদ উনার খাদিম হতে পারে। কিন্তু মালিক হতে পারে না বা দাবিও করতে পারে না। বরং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার মালিক হচ্ছেন স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি।
অতএব, মহান আল্লাহ পাক উনার মালিকানাধীন ঘর তথা মসজিদ ভাঙ্গার অনুমতি কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ অর্থাৎ বাদশাহ, রাজা, আমীর, ওমরাহ, রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী কেউই দিতে পারে না বা দেয়ার অধিকারও রাখে না।
কাজেই, যারা ভাঙ্গার অনুমতি দিবে বা দেওয়ার জন্য বলবে এবং যারা সাহায্য-সহযোগীতা বা সমর্থন করবে তারা প্রত্যেকেই কাট্টা কুফরী করবে এবং ঈমান থেকে খারিজ হয়ে যাবে।
(১) তাফসীরে আহ্কামুল কুরআন- লিল জাস্সাস, (২) তাফসীরে কুরতুবী, (৩) তাফসীরে বায়যাবী, (৪) তাফসীরে রূহুল মায়ানী, (৫) তাফসীরে খাযিন, (৬) তাফসীরে ইবনে কাছীর, (৭) তাফসীরে বাগবী, (৮) তাফসীরে মাদারিক, (৯) তাফসীরে ফতহুল ক্বাদীর, (১০) তাফসীরে রুহুল বয়ান, (১১) তাফসীরে মাযহারী, (১২) তাফসীরে কবীর, (১৩) তাফসীরে দুররে মনছূর, (১৪) তাফসীরে তাবারী, (১৫) বুখারী, (১৬) মুসলিম, (১৭) আবু দাউদ, (১৮) তিরমিযী, (১৯) ইবনে মাজাহ্, (২০) বাইহাক্বী, (২১) কানযুল উম্মাহ্, (২২) মুসনাদে আহমাদ, (২৩) মিশকাত, (২৪) ফতহুল বারী, (২৫) উমদাতুল ক্বারী, (২৬) শরহে নববী, (২৭) উরফুশ্ শাজী, (২৮) বজলুল মাযহুদ, (২৯) আউনুল মা’বুদ, (৩০) মিরকাত, (৩১) আশয়াতুল লুময়াত, (৩২) লুময়াত, (৩৩) শরহুত্ ত্বীবী, (৩৪) তা’লীকুছ ছবীহ্, (৩৫) মুযাহিরে হক্ব, (৩৬) সীরাতুন্নবী (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইত্যাদি।