জাওয়াব: কোন জায়গা বা সম্পত্তি মসজিদের জন্য ওয়াক্ফ করার পর মসজিদ কর্তৃপক্ষ সেই জায়গাতে নামায আদায়ের জন্য ঘর নির্মাণ করে আযান-ইক্বামত দিয়ে নামায আদায় করে ফেললেই তা মসজিদ হিসেবে গণ্য হয়ে যায়।
যেমন এ প্রসঙ্গে ফতওয়ায়ে আলমগীরী ২য় খ- ৪৫৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে-
واما الصلوة فلانه لابد من التسليم عند ابى حنيفة ومـحمد رحمهما الله هكذا فى البحر الرائق. والتسليم فى الـمسجد ان تصلى فيه الـجماعة باذنه ويشترط مع ذالك ان تكون الصلوة باذان واقامة جهرا الا سرا كذا فى الـمحيط والكفاية. ولو جعل رجلا واحدا مؤذنا واماما فاذن واقام وصلى وحده صارا مسجدا بالاتفاق كذا فى الكفاية وفتح القدير.
অর্থ: হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে, মসজিদকে নামায আদায়ের জন্য নিজ মালিকানা হতে হস্তান্তর করা অপরিহার্য। (বাহরুর রায়িক) আর দানকারীর অনুমতিক্রমে জামায়াতের সাথে নামায আদায় করার দ্বারা মসজিদের হস্তান্তর সাব্যস্ত হয়। সেই সাথে আরো শর্ত হচ্ছে যে, নামায আদায় হতে হবে আযান ও ইক্বামতসহ এবং তা প্রকাশ্যে হতে হবে। অপ্রকাশ্যে বা গোপনে নয়। (আল মুহীত, আল কিফায়া) যদি একই ব্যক্তিকে ইমাম ও মুয়াযযিন নিযুক্ত করে এবং সে ব্যক্তি একাকী নামায আদায় করে তবুও সর্বসম্মতিক্রমে মসজিদ হয়ে যাবে। (আল কিফায়া, ফতহুল ক্বাদীর)
আর ওয়াক্ফকৃত সম্পত্তিতে ওয়াক্ফকারীর মালিকানা বহাল থাকে না। তা যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী মালিকানায় পরিণত হয়। যেমন এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত ফতওয়ার কিতাব ফতওয়ায়ে আলমগীরী কিতাবের ২য় খ- ৩৫২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত রয়েছে-
اما حكمه فعندهما زوال الـعين عن ملكه الى الله تعالى.
অর্থ: “হযরত ছাহেবাইন রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের নিকট ওয়াক্ফের হুকুম হলো এই যে, ওয়াক্ফকৃত সম্পদের স্বত্ত্ব বা মালিকানা ওয়াক্ফকারীর অধিকারমুক্ত হয়ে তা মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী মালিকানায় পরিণত হয়।”
অর্থাৎ, মসজিদের জন্য ওয়াক্ফকৃত জায়গায় মসজিদ কর্তৃপক্ষ নামায আদায়ের জন্য ঘর নির্মাণ করে আযান দিয়ে নামায আদায় করার কারণে তা মসজিদ হিসেবে গণ্য হয়ে যায় এবং উক্ত মসজিদ উনার মালিক মহান আল্লাহ পাক তিনি হয়ে যান।
দলীলসমূহ : (১) কুদুরী, (২) আলমগীরী, (৩) দুররুল মুখতার, (৪) রদ্দুল মুহতার, (৫) শামী, (৬) তাহতাবী, (৭) আইনুল হিদায়া, (৮) বাহরুর রায়িক, (৯) ক্বাযীখান, (১০) কিফায়া, (১১) ফতওহুল ক্বাদীর ইত্যাদি।