মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ওই ব্যক্তি কামিয়াব হয়েছে যে ব্যক্তি তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধি লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ!



সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে প্রত্যেক মুসলমান জিন-ইনসান, পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যই তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধি লাভ করা ফরয। সুবহানাল্লাহ! আর সেজন্যে একজন হক্কানী রব্বানী শায়েখ বা মুরশিদ ক্বিবলা উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করে ইলমে তাছাওউফ অর্জন করাও ফরয। সুবহানাল্লাহ!

তাই প্রত্যেক মুসলমান জিন-ইনসান, পুরুষ মহিলা সকলকেই তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধি লাভ করার জন্য একজন হক্কানী রব্বানী শায়েখ বা মুরশিদ ক্বিবলা উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করতে হবে। যা সম্মানিত শরীয়ত উনারই নির্দেশ মুবারক।

- ক্বওল শরীফ: সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যূল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল, মাওলানা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘ঐ ব্যক্তি কামিয়াব হয়েছে যে ব্যক্তি তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধি লাভ করেছে।’ আর হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, পবিত্র ইলম দু’প্রকার। একটি হচ্ছে ক্বলবী ইলম মুবারক অর্থাৎ পবিত্র ইলমে তাছাওউফ আর এটাই মূলত উপকারী ইলম। অপরটি হচ্ছে যবানী ইলম মুবারক অর্থাৎ পবিত্র ইলমে ফিক্বাহ, যা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে বান্দা-বান্দি উনাদের জন্য দলীল।”  প্রমাণিত হলো যে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম সম্পর্কিত দু’প্রকার ইলম মুবারক অর্থাৎ পবিত্র ইলমে ফিক্বাহ ও পবিত্র ইলমে তাছাওউফ শিক্ষা করা ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত মুফাসসিরীনে কিরাম উনারা يزكيهم অর্থাৎ তাযকিয়া করবেন এ কথার ব্যাখ্যায় প্রসিদ্ধ তাফসীর উনার কিতাব যেমন- তাফসীরে জালালাইন শরীফ, কামালাইন শরীফ, বায়হাক্বী শরীফ, কুরতুবী শরীফ, তাবারী শরীফ, কবীর শরীফ, খাযিন শরীফ, বাগবী শরীফ, ইবনে কাছীর শরীফ, দুররে মনছূর শরীফ, আবী সউদ শরীফ, মাযহারী শরীফ, রুহুল বয়ান শরীফ, রুহুল মায়ানী শরীফসহ আরো অনেক প্রসিদ্ধ তাফসীরগ্রন্থে “তাযকিয়ায়ে ক্বলব” বা অন্তর পরিশুদ্ধ করাকে ফরয বলেছেন এবং তজ্জন্য পবিত্র ইলমে তাছাওউফ অর্জন করাকেও ফরয বলেছেন। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ ও ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন, পবিত্র ইলমে তাছাওউফ অর্থাৎ অন্তর বা ক্বলব ইছলাহ করতে হলে মুহলিকাতগুলি দূর করে মুনজিয়াতগুলি হাছিল করতে হবে। এ প্রসঙ্গে “মুছাল্লামুছ ছুবূত” নামক কিতাবের মুক্বাদ্দিমায় উল্লেখ আছে যে- “মুহলিকাত” অর্থাৎ ক্বলব বা আত্মার ধ্বংস সাধনকারী বদ খাছলত এবং “মুনজিয়াত” অর্থাৎ অন্তরকে মুক্তিদানকারী নেক খাছলত সম্পর্কিত পবিত্র ইলম উনাকেই পবিত্র ইলমে তরীক্বত বা পবিত্র ইলমে তাছাওউফ বলে। “মূলত অন্তর থেকে বদ খাছলতসমূহ দূর করে দিয়ে পবিত্র  নেক খাছলতসমূহ পয়দা করার মাধ্যমেই হাক্বীক্বী ইছলাহ বা পরিশুদ্ধতা লাভ করা সম্ভব। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মানব শরীরে এক টুকরা গোশত রয়েছে, তা পরিশুদ্ধ হলে গোটা শরীর পরিশুদ্ধ হবে এবং তা বিনষ্ট বা ধ্বংস হলে গোটা শরীর ধ্বংস হবে। সাবধান! উক্ত গোশতের টুকরাটি হলো ক্বলব বা অন্তর।” 

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, তাই সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে প্রত্যেক মুসলমান জ্বিন-ইনসান পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যই ফরয হচ্ছে ইলমে তাছাউফ অর্জন করার মাধ্যেমে অন্তর থেকে মুহলিকাত দূর করে মুনজিয়াত অর্জন করা। আর সেজন্যে একজন হক্কানী রব্বানী শায়েখ বা মুরশিদ ক্বিবলা উনার নিকট বাইয়াত গ্রহন করাও ফরয। কেননা হক্কানী-রব্বানী শায়েখ বা মুরশিদ ক্বিবলা উনার নিকট বাইয়াত হওয়া ব্যতীত কস্মিন কালেও ইলমে তাছাউফ অর্জন করা সম্ভব নয়। আর ইলমে তাছাউফ ব্যতিত আত্মশুদ্ধি লাভ করাও সম্ভব নয়।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট