খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, সুলতানুল আরিফীন, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাকিমুল হাদীস, আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার কতিপয় কারামাত মুবারক ও কামালত মুবারক (১)

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার ওলী বা বন্ধুগণকে সীমাহীন মর্যাদা-মর্তবা, সম্মান-ইজ্জত মুবারক হাদিয়া করেন। সেই মর্যাদা-মর্তবার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে কারামত মুবারক। ওলী আল্লাহ হওয়ার জন্য কারামত শর্ত নয়। কিন্তু প্রত্যেক ওলী আল্লাহ উনাদের কিছু না কিছু কারামত মুবারক প্রকাশিত হয়। ওলী-আল্লাহগণ উনাদের কারামত মুবারক মুমিন-মুত্তাকীগণের রুহানী গেজা বা খাদ্য। ইহা মুমিন-মুমিনাগণের ঈমানী কুওওয়াত বা শক্তি বৃদ্ধি করে। আর ফাসিক-ফুজ্জার, কাফির-মুশরিকদের ধ্বংসের পথ প্রসারিত করে।
كَرَامَاتٌ (কারামত) শব্দটি বহুবচন। তার একবচন হচ্ছে كَرَامَةٌ (কারামত) অর্থঃ সম্মান, মর্যাদা, অলৌকিক ঘটনাসমূহ।
ওলী-আল্লাহগণ উনাদের সম্মান বা মর্যাদা-মর্তবার বহিঃপ্রকাশ অলৌকিক ঘটনাকে কারামত মুবারক বলা হয়। হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাধ্যমে প্রকাশিত অলৌকিক ঘটনাবলীকে مُعْجِزَةٌ মু’জিযা শরীফ বলা হয়।
আর কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদ্বীন, বদ মাযহাবী, বদ আক্বীদা, দাজ্জাল, ফাসিক-ফুজ্জারদের দ্বারা প্রকাশিত অস্বাভাবিক ঘটনাবলীকে اِسْتِدْرَاجٌ (ইসতিদরাজ) বলা হয়।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক- শিশু বাচ্চাদের মাধ্যমে প্রকাশিত ঘটনাবলীকে عَوْنٌ (আওন) বলে। 
আক্বাইদে নাছাফীসহ অনেক কিতাবে বর্ণিত আছে যে, 
كَرَامَاتُ الْاَوْلِيَاءِ حَقٌّ.
অর্থ : “আউলিয়া কিরামগণ উনাদের কারামত মুবারক সত্য।” যা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা-বিশ্বাস। বদ আক্বীদা-বদ মাযহাবী লোকেরা কারামত মুবারককে অস্বীকার করে। নাউযুবিল্লাহ! আমভাবে কারামত উনার অস্তিত্বকে অস্বীকার করা কুফুরী। খাছ বা নির্দিষ্ট কোন ওলী আল্লাহ উনার কারামতকে অস্বীকার করা কুফুরী না হলেও ক্ষেত্র বিশেষে ঈমান হারা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা, কারামত অস্বীকার দ্বারা সংশ্লিষ্ট ওলীআল্লাহ উনার প্রতি বিদ্বেষ ভাবাপন্নতা পরিলক্ষিত হয় যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقْد آذَنْتُهُ بِالْحَرْبِ
অর্থ: যে ব্যক্তি আমার ওলী উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, আমি তার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করি। নাউযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ) 
অর্থাৎ ওলীআল্লাহগণ উনাদের প্রতি বিদ্বেষ-বিরোধীতা লানতগ্রস্থতার বহিঃপ্রকাশ।
কারামত মুবারক- পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দ্বারা স্বীকৃত। পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে তার অনেক প্রমাণ আছে। কুদরতীভাবে উম্মু রুহিল্লাহ হযরত মরিয়ম আলাইহাস সালাম উনার সন্তান লাভ এবং অমৌসুমী ফল খাওয়া। হযরত আসিফ বিন বারখিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার চোখের পলকে সাবার রানী বিলকিস আলাইহাস সালাম উনার সিংহাসন আনয়ন এবং হযরত সুলায়মান আলাইহিস সালাম উনার সামনে তা হাজিরকরণ সবই কারামত মুবারক উনারই অন্তর্ভূক্ত। 
একইভাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত- হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম “ইয়া সারিয়া! আল জাবাল” বলা, আর তা নাহাওন্দ অভিযানের সৈন্য বাহিনী শুনতে পাওয়া। লাঠির মাথায় আগুন প্রজ্জলিত হওয়া ইত্যাদি সবই সম্মানিত কারামত মুবারকের অন্তর্ভূক্ত। যাকে অস্বীকার করা কুফুরী।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট