বিদেশী অপসংস্কৃতিকে অনুসরণ-অনুকরণেরই ঘৃণ্য ফসল এই জুয়া বা ক্যাসিনো সংস্কৃতি

ক্যাসিনোর দ্বারা যে জুয়ার বিস্তার হচ্ছে দেশে তা বাংলাদেশের জন্য একটি অস্বাভাকি বিষয়। যার কারণ হচ্ছে, জুয়া বন্ধে দেশে যথোপযুক্ত আইনও নেই। প্রায় ২শ’ বছরের পুরনো আইনে লঘু দ-ের কথা বলা আছে।
এ সংক্রান্ত আইন (১৮৬৭) অনুযায়ী যে কোনো ঘর, স্থান বা তাঁবু জুয়ার আসর হিসেবে ব্যবহৃত হলে তার মালিক বা রক্ষণাবেক্ষণকারী, জুয়ার ব্যবস্থাপক বা এতে কোনো সাহায্যকারী তিন মাসের কারাদ- বা অনূর্ধ্ব ২০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে। এ রকম কোনো ঘরে তাস, পাশা, কাউন্টার বা যে কোনো সরঞ্জামসহ কোনো ব্যক্তিকে ক্রীড়ারত (জুয়ারত) বা উপস্থিত দেখতে পাওয়া গেলে তাকে এক মাস পর্যন্ত কারাদ- অথবা ১০০ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হতে পারে। পুলিশ জুয়ার সামগ্রীর খোঁজে যে কোনো সময় (বল প্রয়োগ করে হলেও) তল্লাশি চালাতে পারবে বলেও এই আইনে উল্লেখ রয়েছে।
এ সংক্রান্ত আইনের দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে প্রভাবশালীরা। তাই জুয়ার (ক্যাসিনোর) আস্তানায় অভিযান চালিয়েও লাভ হয় না। কারণ আদালতে এসব ক্যাসিনো পরিচালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা যায় না। এছাড়া বিভিন্ন ক্লাব নির্বিঘেœ ক্যাসিনো চালাতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতে রিট মামলা দায়ের করে। গত পাঁচ বছরে উচ্চ আদালতে এ ধরনের অন্তত দেড়শ’ রিট হয়। আদালত যখন কোনো বিষয়ে অনুমতি দেয় তখন কারও কিছু করার থাকে না। ক্যাসিনোতে জুয়া খেলার সময় বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়ে জুয়াড়িদের গ্রেফতার করা হলেও আদালতে তাকে জুয়াড়ি হিসেবে প্রমাণ করা দুরূহ। জুয়াড়ি আদালতে দাঁড়িয়ে জুয়া খেলার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে। ২-১টি ক্ষেত্রে প্রমাণ করা গেলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আপরাধী জামিনে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
পরিশেষে উল্লেখ্য, এই ক্যাসিনো একটি ইহুদী কুটকৌশল। এই ক্যাসিনোর ধোঁকায় ইহুদীরা বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর ধনীদের ভিক্ষুকে পরিণত করে থাকে। আর এই ষড়যন্ত্রের অংশের ভাগিদার হচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ৯৮ ভাগ মুসলমান উনাদের দেশ। আর পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে জুয়াকে স্পষ্টভাবে হারাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ (২) অনুচ্ছেদে ‘গণিকাবৃত্তি ও জুয়াখেলা নিরোধের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে’ এই মর্মে অঙ্গিকার করা হয়েছে। সেইসাথে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার যে বঙ্গবন্ধুকে আদর্শ হিসেবে গণ্য করে তিনিও এদেশে মদ-জুয়া-হাউজিং ইত্যাদি অশ্লীল কর্মকান্ডকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। আর তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত অবিলম্বে দেশের ভেতর এসব পশ্চিমা ক্যাসিনো সংস্কৃতি তথা জুয়ার ব্যবস্থার মুল্যোৎপাটন করা। সেইসাথে এসব ক্যাসিনো যেসব মহল দেশের ভেতর স্থাপন করে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতিকে ঘৃণ্যভাবে উপস্থাপন করতে চাইছে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে এমন কঠোর শাস্তি প্রদান করা যেন এই শাস্তি দেখে কোন মহলই আর পরবর্তীতে এই ক্যাসিনো স্থাপন করতে সাহস না পায়। সেইসাথে এই ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে আলাদা আইন প্রণয়ন করে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট