(১ম খণ্ড)
কয়েক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে এই কিতাব প্রকাশের। আশা মাত্রই সংগ্রহ করে পড়া শুরু করলেও বিভিন্ন কারণেই কিতাব পরিচিতি লিখতে দেরী হয়ে গেছে। আজ এ পর্যায়ে কেবল পরিচিতিই লিখবো না সাথে আমার কিছু উপলব্ধিও যোগ করবো আপনাদের সাথে।
যথারীতি এই কিতাবেও সম্মানিত “কওল শরীফ” এবং “মুকদ্দিমা” সংযোজিত হয়েছে। “আযওয়াজুম মুত্বহহারাত” শব্দ মুবারক দিয়ে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বোঝানো হয় এবং উনারা হচ্ছেন সকল মুমিন উনাদের মাতা। কিন্তু “মু’মিন উনাদের মাতা” বলতে যে কেবল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম, আউলিয়া কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং সাধারণ মুমিন মুসলমান উনাদের মাতা তা নয় বরং সকল সম্মানিত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম, জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেরই সম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম সে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
‘মুসলিম শরীফ’ উনার থেকে একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সেখানে উল্লেখ রয়েছে- “উম্মুল মু’মিনীন আল উলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত অন্তর মুবারকে খাছভাবে ঢেলে দেয়া হয়েছে। আবার অন্যত্র এর ব্যাখ্যা করা হয়েছে উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত রিযিক হিসেবে দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! তাহলে বোঝা গেল সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে খাসভাবে তৈরি করা হয়েছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য। আরো যে বিষয়টি স্পষ্ট হয় তাহলো আহাল ও আহলিয়ার মুহব্বত রিযিকের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
এই কিতাব উনার মাঝে যামানার লক্ষ্যস্থল ওলী আল্লাহ যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার অনেক মুবারক কারামত প্রকাশিত হয়েছে যার মাধ্যমে সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সঙ্গে ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার গভীর নিসবত মুবারকের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। সুবহানাল্লাহ। আমি চাই আপনারা কিতাব কিনে, পড়ে সে বিষয়গুলো জেনে নিন। কিতাব থেকে বিস্তারিত পড়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি তবে এখানে উপলব্ধির জন্য কেবল একটি বিষয় উল্লেখ করছি।
হযরত আবনাউ (ছেলে সন্তানগণ) রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত বানাত (কন্যা সন্তানগণ) উনারা কে কেমন তবিয়ত মুবারকের (ঈযধৎধপঃবৎরংঃরপ) অধিকারী ছিলেন তাও উল্লেখ করা হয়েছে এবং যমীনে উনাদের আগমনের তরতীব সহ বর্ণনা সত্যি অসাধারণ। এই বিষয় কোন কিতাবে উল্লেখ নেই। হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাদেরকে প্রত্যক্ষ দেখে দেখে বর্ণনা না করলে এভাবে বর্ণনা করা অসম্ভব। সুবহানাল্লাহ!
আমি নিজে অনেক বড় বড় লেখকের লিখিত বইয়ে পড়ে দেখেছি, সেখানে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পিতা-মাতা উনাদের খ্রিস্টান হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং উনার চাচাতো ভাই হযরত ওরাকা ইবনে নাওফিল রদিয়াল্লাহু আনহু উনাকে খ্রিস্টান পাদ্রী হিসেবে উল্লেখ করেছে। নাউযুবিল্লাহ! এই তথ্য এক অর্থে বিভ্রান্তিকর। যদিও সে সময় ঈসায়ী ধর্মের এক শাখা হকের উপরে ছিলেন। যার উপর পাদ্রী বহেরা রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং সিরিয়ার সন্নিকটে নাস্তুরিয়ান পাদ্রী রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন। কিন্তু এই কিতাবে প্রথম উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বাবা-মা এবং উনার চাচাতো ভাই হযরত ওরাকা ইবনে নাওফিল রদিয়াল্লাহু আনহু উনাদের ঈমানদার এবং আদব ও সম্মানের সঙ্গে উনাদের বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে যা পূর্বে কেউ চিন্তাও করেননি এবং প্রকাশ করেননি অথচ এটিই সত্য এবং শরীয়ত সম্মত। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মাঝে বর্ণিত রয়েছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনি পবিত্র পৃষ্ঠ মুবারক উনাদের মাধ্যমে যমীনে আগমন করেছেন তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পিতা ৪ পুরুষ পূর্বে আর উনার সম্মানিত মাতা ১০ম পূর্ব পুরুষে গিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্ব পুরুষের সঙ্গে মিলেছেন। তাহলে বোঝা গেল উনারাও পবিত্র পৃষ্ঠ মুবারকের মাধ্যমেই যমিনে এসেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এই কিতাব মুবারক থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিসবতে আযীম শরীফে উনার সম্মানিত দুধ মাতা হযরত হালিমা সাদিয়া আলাইহাস সালাম উনার উপস্থিতির বিষয়টি জানা গেছে যা আমাদের শিক্ষা দেয় কি করে মাতার হক আদায় করতে হয়। সুবহানাল্লাহ!