সম্মানিত শরীয়ত মুতাবিক বাল্য বিবাহ খাস সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত, বাল্য বিবাহের বিরোধীতা করা হারাম ও কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত-(২)



উম্মুল মু’মিনীন আছছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র আক্বদ বা নিসবাতুল আযীম মুবারক উনার ৬ বছর বয়স মুবারকে আক্বদ বা শাদী মুবারক হওয়ার বিষয়টি যারা অস্বীকার করে তারা অসংখ্য ছহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ অস্বীকার করার কারণে কাফির! 
উম্মুল মু’মিনীন আছছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র আক্বদ বা শাদী মুবারক উনার সময়কার বয়স মুবারক নিয়ে কোনো কোনো জাহিল ও গুমরাহ লোক চু-চেরা করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ বিশুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য মত হচ্ছে, উনার বয়স মুবারক যখন ৬ বছর তখন উনার সাথে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র আক্বদ বা নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় এবং ৯ বছর বয়স মুবারক-এ তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম হুজরা শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ বিষয়টি একটি নয় দুটি নয় বরং অসংখ্য পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত। যেমনঃ
إِبْرَاهِيمَ وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِى شَيْبَةَ وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالَ يَحْيَى وَإِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنِ الأَسْوَدِ عَنْ حضرت عَائِشَةَ صديقة عليها السلام قَالَتْ تَزَوَّجَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهْىَ بِنْتُ سِتٍّ وَبَنَى بِهَا وَهْىَ بِنْتُ تِسْعٍ
অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে (হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম) উনার আক্বদ বা নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন উনার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। আর তিনি ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (ছহীহুল বুখারী কিতাবু বাদইল ওয়াহই বাবু ইনকাহির রজুলি ওয়ালাদাহুছ ছিগার) 
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ছহীহ বা বিশুদ্ধ কিতাব ‘পবিত্র ইবনে মাজাহ শরীফ’ উনার বর্ণনা- 
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حضرت عَائِشَةَ صديقة عليها السلام، قَالَتْ تَزَوَّجَنِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ وَأَنَا بِنْتُ سِتِّ سِنِينَ، فَأَسْلَمَتْنِي إِلَيْهِ, وَأَنَا يَوْمَئِذٍ بِنْتُ تِسْعِ سِنِينَ. 
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার আক্বদ বা নিসবাতুল আযীম মুবারক সম্পন্ন হয় যখন আমার বয়স মুবারক ছিল ৬ বছর। আর ৯ বছর বয়স মুবারকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফে আমি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করি।” সুবহানাল্লাহ! (সূনানু ইবনে মাজাহ কিতাবুন নিকাহ বাবু নিকাহিছ ছিগার ইউযাউয়্যিজু হুন্নাল আবাউ।) 
এছাড়াও আরো বহু দলীল প্রমাণ উল্লেখ রয়েছে যা দ্বারা প্রমাণিত যে, বাল্য বিবাহ করা খাস সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত, বাল্য বিবাহের বিরোধীতা করা হারাম ও কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত ।
 
কাজেই, এ বিষয়টি অস্বীকার করার অর্থ হচ্ছে একাধিক পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদেরকে অস্বীকার করা এবং পবিত্র সুন্নত শরীফ উনাকে অস্বীকার করা । আর এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, পবিত্র হাদীছ শরীফ অস্বীকার করা এবং পবিত্র সুন্নত শরীফ উনাকে অস্বীকার করা কাট্টা কুফরী। পবিত্র সুন্নত মুবারক পালনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে যিনি খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ 
 অর্থ: “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন যদি তোমরা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো বা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত হাছিল করতে চাও, তবে তোমরা আমার অনুসরণ করো। তাহলে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে মুহব্বত মুবারক করবেন এবং তোমাদের গুনাহখতা ক্ষমা করে দিবেন। আর খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যাধিক ক্ষমাশীল ও দয়ালু।” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের প্রতি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়ালু হবেন। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- 
مَنْ اَحَبَّ سُنَّتِي فَقَدْ أَحَبَّنِي وَمَنْ أَحَبَّنِي كَانَ مَعِي فِي الْجَنَّة
অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলো, সে যেন আমাকেই মুহব্বত করলো আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত করলো, সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
এখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ-নিষেধ মুবারকগুলি সূ²াতিসূ² পালন করতে হবে। আর উনার সুন্নত মুবারক যে আঁকড়িয়ে ধরবে তার জন্য বিশেষ মর্যাদা রয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে একটি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
مَنْ تـَمَسَّكَ بِسُنَّتِىْ عِنْدَ فَسَادِ اُمَّتِىْ فَلَه اَجْرُ مِأَتَ شَهِيْدُ
অর্থ: “আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি ফিতনা-ফাসাদের যামানায় একটিমাত্র সুন্নত মুবারক উনাকে আঁকড়ে ধরবে, সে একশত শহীদ উনার ছাওয়াব লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ! (বায়হাক্বী শরীফ)
এখন আমরা জানি, একজন শহীদ উনার ছাওয়াব অনেক। তাহলে একশত শহীদ উনাদের ছাওয়াব তো আরো অধিক। এখন আমরা যদি একশত শহীদ উনাদের ছাওয়াব পেতে চাই, তাহলে আমাদেরকে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করতে হবে। আর সুন্নত মুবারক উনাকে অনুসরণের দ্বারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে জান্নাতে অবস্থানের সৌভাগ্য লাভ করা যায়। সুবহানাল্লাহ! আর সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণে আমল করলে সেই আমলের অনেক ফযীলত পাওয়া যায়। সুবহানাল্লাহ!
এখন সম্মানিত শরীয়ত মুতাবিক বাল্য বিবাহ খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত কেউ যদি এই মুবারক আমল করতে পারে তার জন্য ফযীলতের কারন হবে , সে একশত শহীদ উনার ছওয়াব পাবে , আর যদি করতে না পারে তার কোন গুনাহ হবে না।  তবে যদি কেউ  বাল্য বিবাহ উনার বিরোধীতা করে তবে তা হারাম ও কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত  হবে, আর আক্বাইদের মাছয়ালা অনুযায়ী সে মুরতাদ হবে। উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা ইহাই স্পষ্টভাবেই বুঝা যায় ।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট