সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “মেয়েরা হচ্ছে শয়তানের ফাঁদ।” (শিহাব)
হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, একদা আমি এবং খাতুনে জান্নাত হযরত আন নূরুর রবি’য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফে গেলাম। আমরা দেখলাম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কাঁদছেন। আমরা সবিনয়ে আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি এভাবে কেন কাঁদছেন? তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আমি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রাত্রিতে মহিলাদেরকে কঠিন আযাবে গ্রেফতার দেখেছিলাম। আজ হঠাৎ সেই ভয়াবহ আযাবের দৃশ্য মনে পড়ায় আমার সম্মানিত চোখ মুবারক থেকে নূরুল মুহব্বত (অশ্রু) মুবারক ঝরছে। হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সবিনয়ে আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রজনীতে আপনি কি কি ভয়াবহ দৃশ্য দেখেছেন? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,
(১) আমি জনৈকা মহিলাকে তার চুলে বেঁধে লটকিয়ে রাখতে দেখেছি। এসময় তার মাথা থেকে মগজ বের হচ্ছিলো। নাউযুবিল্লাহ!
(২) অপর এক মহিলাকে দেখলাম, তার বক্ষের বিশেষ স্থান বেঁধে তাকে লটকিয়ে রাখা হয়েছে এবং তার হস্তদ্বয়কেও পিছনের দিকে নিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। আর এ সময় বিষাক্ত ‘যাক্কম’ (এক প্রকার কাঁটাযুক্ত ফলদার ফলের রস নিংড়িয়ে তা ফোঁটা ফোঁটা করে তার গলায় দেয়া হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
(৩) অপর এক মহিলাকে দেখলাম, তার জিহবা বেঁধে তাকে লটকিয়ে রাখা হয়েছে এবং তার হাত দুটি পিছনের দিকে বেরিয়ে রয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!
(৪) আরেকজন মহিলাকে দেখলাম, তার হাত, পা, ও কপাল বরাবর বেঁধে তাকে লটকিয়ে রাখা হয়েছে এবং তার প্রতি বিষাক্ত সাপ বিচ্ছুকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। সেগুলো তাকে দংশন করছে। নাউযুবিল্লাহ!
(৫) অপর এক মহিলাকে দেখলাম, সে নিজেই নিজের দেহ ছিঁড়ে ফেঁড়ে ভক্ষণ করছে এবং তার নিচে আগুন প্রজ্জ্বলিত রয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!
(৬) অপর এক মহিলাকে দেখলাম, তার দেহকে আগুনের কাঁচি দ্বারা কেটে টুকরো টুকরো করা হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
(৭) কালো চেহারাধারী আরেক মহিলাকে দেখলাম, সে তখন স্বীয় নাড়ি-ভূড়ি খাচ্ছিল। নাউযুবিল্লাহ!
(৮) আমি একজন বোবা অন্ধ ও বধির মহিলাকে দেখলাম, তাকে আগুনের সিন্দুকের মাঝে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তার মাথা থেকে মগজ গলে গলে বের হচ্ছিল। আর তার দূর্গন্ধ শ্বেত এবং কুষ্ঠ রোগীর চেয়েও উৎকট ছিল। নাউযুবিল্লাহ!
(৯) অপর মহিলাকে দেখলাম, শূকরের ন্যায় মাথা বিশিষ্ট এবং গাধার ন্যায় দেহ বিশিষ্ট, তাকে হাজারো রকমের আযাব গযব প্রদান করা হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ!
(১০) কুকুরের মত দেহ বিশিষ্ট জনৈকা মহিলাকে দেখলাম, তার মুখ দিয়ে বিষাক্ত সাপ-বিচ্ছু প্রবেশ করে তা তার লজ্জাস্থান কিংবা পিছনের রাস্তা দিয়ে বের হচ্ছে। আর আযাবের ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তখন আগুনের গুর্জ দ্বারা তাকে বেদমভাবে প্রহার করছে। নাউযুবিল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জবান মুবারকে মহিলাদের ভয়াবহ আযাবের ঘটনা শুনে হযরত আন নূরুর রবি’য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সবিনয়ে আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই মহিলাদেরকে কোন বদ আমলের কারণে কঠিন শাস্তি দেয়া হচ্ছিল? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
“প্রথম যে মহিলাকে আযাব দেয়া হচ্ছিল তার কারণ হচ্ছে, সেই মহিলা পরপুরুষদের সামনে নিজের মাথার চুলকে খুলে রাখতো। ফলে তা পরপুরুষদের দৃষ্টিগোচর হতো।
দ্বিতীয় মহিলা হচ্ছে: স্বামীর অনুমতি ছাড়া অন্যের শিশু বাচ্চাকে নিজের বুকের দুধ পান করাতো।
তৃতীয় মহিলা হচ্ছে: সেই মহিলা যে স্বীয় জিহবা বা বাকযন্ত্রের সাহায্যে নিজের স্বামীকে কষ্টদায়ক কথা বার্তা বলতো।
চতুর্থ মহিলা হচ্ছে: স্বামীর বিনা অনুমতিতে ঘরের বাইরে চলে যেত এবং স্বাভাবিক মাজুর ও সন্তান হওয়ার কারণে মাজুর অবস্থায় গোসল করতো না।
পঞ্চম মহিলা হচ্ছে: পরপুরুষকে দেখাবার জন্যে নিজেকে সুসজ্জিত করতো এবং মানুষের কাছে পরনিন্দা করে বেড়াতো।
ষষ্ঠ মহিলা হচ্ছে: পরপুরুষকে নিজের সৌন্দর্য ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দেখিয়ে বেড়াতো।
সপ্তম মহিলা হচ্ছে: শক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও রীতিমত ওযূ ও গোসল করতো না এবং নামাযও পড়তো না।
অষ্টম মহিলা হচ্ছে: মিথ্যা কথা বলতো এবং অন্যের দোষ বলে বেড়াতো।
নবম মহিলা হচ্ছে: স্বীয় স্বামীর প্রতি হিংসা বিদ্বেষ পোষণ করতো।
দশম যে মহিলার শাস্তি হচ্ছিল তা হচ্ছে: বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও পরপুরুষের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হতো।
মহান আল্লাহ পাক ও উনার প্রিয়তম হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যেন আমাদেরকে হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে খালিছ আল্লাহওয়ালী হওয়ার তাওফীক দান করেন। আমীন!