যেকোনো উন্নয়ন মূলক কাজের অজুহাতে পবিত্র মসজিদসমূহ ভাঙ্গা কাট্টা কুফরি ও চির-জাহান্নামী হওয়ার কারন ৷

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, আওলাদে রসূল, মাওলানা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মসজিদ শব্দের আভিধানিক অর্থ সিজদার স্থান। আর পারিভাষিক অর্থ যিনি খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার উদ্দেশ্যে নামায অর্থাৎ রুকূ, সিজদা, ই’তিকাফ প্রভৃতি ইবাদতের নির্দিষ্ট স্থানকে মসজিদ বলা হয়। কেউ বললো আমি আমার এ জমিটি মসজিদের জন্য প্রদান করলাম। অতঃপর একজন মুছল্লিও যদি সেখানে আযান, ইক্বামত দিয়ে নামায আদায় করে নেয় তবে সেস্থানটি মসজিদের জন্য ওয়াক্বফ হয়ে যাবে। ওয়াকফকৃত স্থানে পবিত্র ও সম্মানিত মসজিদ নির্মিত হলে কিয়ামত পর্যন্ত ভাঙ্গা, স্থানান্তর করা, বিক্রি করা জায়িয নেই। এছাড়াও পবিত্র ও সম্মানিত মসজিদসমূহ উনাদের জন্য ওয়াকফকৃত সম্পত্তিও কিয়ামত পর্যন্ত অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা জায়িয নেই।  

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম অর্থাৎ সম্মানিত ও পবিত্র শরীয়ত উনার ফতওয়া হচ্ছেন পবিত্র ও সম্মানিত মসজিদসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করা অর্থাৎ সার্বিকভাবে হিফাজত করা ও হিফাযত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা ফরয। এর বিপরীত অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ ভাঙ্গা, স্থানান্তর করা, বিক্রি করা এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ উনার মানহানী করা ও করার সহযোগীতা করা কাট্টা কুফরী ও হারাম এবং জাহান্নামী হওয়ার কারণ। কেননা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহ যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র ঘর। তাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহ উনাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতিই সম্মান প্রদর্শন। যার প্রতিদান জান্নাত। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহের প্রতি অসম্মান বা বেয়াদবী করা প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতিই বেয়াদবী করার শামিল। যার পরিণাম জাহান্নাম। নাউযুবিল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, তিনি বলেন,  যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আর নিশ্চয়ই সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। অর্থাৎ সমস্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ও পবিত্র ঘর মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা জিন শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮) আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন- “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ও পবিত্র ঘর মুবারক আর সম্মানিত ও পবিত্র মাদ্রাসা মুবারক আমার সম্মানিত ও পবিত্র ঘর মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, তিনি বলেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “মহান আল্লাহ পাক তিনি আদেশ মুবারক করেন- সম্মান করার জন্য এবং উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করার জন্য অর্থাৎ না ভাঙ্গার জন্য, ঐ সকল মুবারক ঘরসমূহ উনাদেরকে যে সকল মুবারক ঘরসমূহে মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক স্মরণ করা হয় ও তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করা হয় সকাল-সন্ধ্যায়।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)

আর اَذِنَ اللَّهُ اَنْ تُرْفَعَ উনার ব্যাখ্যায় উল্লেখ রয়েছে, “মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করার জন্য এবং না ভেঙ্গে উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করার জন্য সম্মানিত আদেশ মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে নীশপূরী শরীফ ১/৭৬৫)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ নির্মাণ করো। অর্থাৎ ভাঙ্গার তো প্রশ্নই আসে না বরং আরো বেশী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ নির্মাণ করতে হবে।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফে আবী শায়বাহ শরীফ ১/২৭৪, আস সুনানুল কুবরাহ লিলবাইহাক্বী ২/৬১৫)

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, তাই সমস্ত মুসলমান উনাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করা অর্থাৎ সার্বিকভাবে হিফাজত করা ও হিফাযত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং বেশি বেশি করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক নির্মাণ করা। সুবহানাল্লাহ! আর যারা বিভিন্ন অজুহাদ দেখিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভেঙ্গে যাচ্ছে, ভাঙ্গার কোশেশ করে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং শক্ত প্রতিবাদ করা। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূল কথা হলো- সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করা ফরয। সুবহানাল্লাহ! পক্ষান্তরে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদসমূহ ভাঙ্গা, ভাঙ্গার কাজে সহযোগীতা করা নির্দেশ প্রদান করা, স্থানান্তর করা, বিক্রি করা কাট্টা কুফরী, হারাম ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে রাস্তা-ঘাট, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, নদী সংরক্ষণ বা যেকোনো উন্নয়ন মূলক কাজের অজুহাতে পবিত্র মসজিদসমূহ ভাঙ্গা, ক্রয়,  স্থানান্তর ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকা। নচেৎ ইহকাল ও পরকালে কঠিন কাফ্ফারা আদায় করতে হবে।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট