পাহাড়ের ১৮শ ফুট উঁচুতেও বিদ্যুৎ

পাহাড় মাড়িয়ে ১৮শ ফুট উঁচুতে রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি। খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে ৪৯ কিলোমিটার দূরে ও ১৮শ ফুট উঁচুতে সাজেকে বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে খুঁটিতে তার টাঙানোর কাজ।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সাজেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সাজেক ইউনিয়নের আয়তন ১ হাজার ৭৭১ বর্গকিলোমিটার। সেখানে ৩০ হাজার লোক স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। এছাড়া প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার পর্যটক ভ্রমণ করছেন সাজেক। এ অঞ্চলে শিল্প কারখানাও গড়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। এজন্য বিদ্যুৎ ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন অপরিহার্য।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে উন্নয়নের জন্য প্রায় ৫৬৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় ২০১৭ সালে। প্রকল্পের আওতায় এ তিন জেলায় ১২টি নতুন ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া বিদ্যমান সাব-স্টেশনগুলোর সংস্কার ও লোড ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। পুরাতন লাইন সংস্কারের পাশাপাশি নতুন করে স্থাপন করা হয়েছে ১ হাজার ৩১০ কিলোমিটার বিতরণ লাইন। এরমধ্যে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে সাজেক পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে সাজেকসহ তিন জেলার ৫৬ হাজার নতুন গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক (ডিসি) একেএম মামুনুর রশীদ বলেন, সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে তিন পার্বত্য জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রকল্পও একটি। সাজেক ভ্যালিতে পর্যটনের ক্ষেত্রে বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সেখানে বিদ্যুতের সুবিধা দেওয়ার লক্ষে ইতোমধ্যে সঞ্চালন লাইন বসানোর কাজ চলছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন জানায়, প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে ব্যয় হবে ৫৩৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা ও অবশিষ্ট ২৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা খরচ হবে পিডিবির নিজস্ব তহবিল থেকে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সাজেকের মানুষ বিদ্যুত সংযোগ পাবেন। সেখানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া যাবে।
তিন পার্বত্য অঞ্চলে ৮৬ হাজার ৫৬৪ গ্রাহকের জন্য লোড চাহিদা রয়েছে ৫৪ দশমিক ৫০ মেগাওয়াট। সরবরাহ লাইনের ধারণক্ষমতা রয়েছে ৯৯ মেগাওয়াট। বার্ষিক লোড চাহিদা বৃদ্ধির হার ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ হিসাবে ২০৩০ সালের মধ্যে এ তিন জেলার লোড চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ২৭৯ মেগাওয়াট। একইসঙ্গে গ্রাহক চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে ১ লাখ ৭৩ হাজার ১২৮ জনে। এসব বিবেচনায় নিয়ে পার্বত্যাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট