৪৮ ঘণ্টায় ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরায়েলের হামলায় গাজা শহরে ফিলিস্তিনের ইসলামিক জিহাদের এক নেতা নিহত হওয়ার পর উপত্যকায় নতুন করে ইহুদীবাদী ইসরাইলের হামলা বেড়ে গিয়েছে। এ পর্যন্ত অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন বলে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গত মঙ্গলবার সকালে ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের ইসলামিক জিহাদের নেতা বাহা আবু আল-আতা ও তার স্ত্রী নিহত হওয়ার পর গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনি গ্রুপের সদস্যরা ইসরায়েলে রকেট হামলা করে। তারপর ইসরায়েলের পাল্টা হামলা শুরু করলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের বরাতে জানানো হয়েছে, ফিলিস্তিনের রকেট হামলার জবাবে আকাশপথে ডজন খানেক হামলা করে ইসরায়েল। এদিকে সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, সিরিয়ার দামেস্কে অবসস্থিত ইসলামিক জিহাদের কর্মকর্তা আকরাম আল-আজৌরির বাড়িতেও ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।
গতকাল ইয়াওমুল খামীছ (বৃহস্পতিবার) গাঁজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের একই পরিবারের ছয়জন নিহত হয়েছেন। তারা সবাই বেসামরিক নাগরিক। হাসপাতাল কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দরা বলছেন, সর্বশেষ ছয়জনসহ গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় ৩২ জন নিহত হলেন।

বুধবার ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের কমান্ডার নিহত হওয়ার পর মিসরের মধ্যস্থতা করতে আসে। তারা ফিলিস্তিনকে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়। ইসলামিক জিহাদ বলে, যদি এটা না মানা হয় তাহলে তারা আন্তঃসীমান্তে ব্যাপক হামলা চালাবে।

কান্নায় ভারী গাজার বাতাস:

হাসপাতালে পুত্রের লাশের মুখে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন পিতা। শেষ আদর দিচ্ছেন প্রাণপ্রিয় সন্তানকে। তাকে যে এখনই বিদায় দিতে হবে। কোথাও বা সন্তানের লাশের কাছে বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন মা। আবার কোথাও মাটির সাথে মিশে যাওয়া বাড়ির ধ্বংস স্তুপের দিকে হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এক কিশোর।

আবার কোন পরিবারের তো কান্না করার মতোও কেউ অবশিষ্ট নেই। পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলেছে দখলদার ইসরাইলের বিমান থেকে ফেলা বোমা। দেইর আল বালাহ এলাকায় তেমনি একটি পরিবারের ৬ সদস্য নিহত হয়েছেন।
কেউ সন্তানকে হারিয়েছে। আবার কারো বা মাথা গোজার ঠাইটুকু শেষ হয়ে গেছে, সেই সাথে হারিয়েছে স্বজন। বুধবার ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার চিত্র ছিল এমনই।

মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি বিমান হামলা কেড়ে নিয়েছে ৩২টি প্রাণ। মাটির সাথে মিশে গেছে অর্ধশতাধিক বাড়ি। হাসপাতালের বিছায় আহতদের আর্তচিৎকার। নিহতের স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠছে বাতাস। গাজা বাসীর জন্য যদিও এই যন্ত্রণা নতুন নয়। বছরের পর বছর ধরে তাদের ওপর চলছে ইসরাইলের এই নির্যাতন।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট