বাবরি মসজিদের রায়ে বাসদের উদ্বেগ

ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের একপেশে রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। গতকাল ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতা খালেকুজ্জামান এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে খালেকুজ্জামান বলেন, বাবরি মসজিদ সংক্রান্ত রায়ে আইনি বিচারের চেয়েও বিশ্বাসের ভিত্তিতে ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ শক্তির সন্তুষ্টিকে লক্ষ্য রেখে মীমাংসা করার অভিপ্রায় প্রাধান্য পেয়েছে। বাবরি মসজিদ ভাঙাকে বেআইনি কাজ বলে রায়ে উল্লেখ করা হলেও আইন অমান্যদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উপরন্তু একই স্থানে মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর স্বান্তনা ও সমঝোতার উপায় হিসেবে ভিন্ন স্থানে পাঁচ একর জমিতে মসজিদ নির্মাণের কথাও রায়ে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এ রায়ের ঘটনা শুধু যে মসজিদ স্থানান্তরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না তা ততোটা বিবেচিত হয়নি, বরং বিষাক্ত রাজনৈতিক ঝড় নতুন করে উঠবে কিনা, সে সম্পর্কে উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে।
বাবরি মসজিদের নিচে স্থাপনার চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই) দাবি করেছে। সেখানে ইসলামি কৃষ্টি-সংস্কৃতির চিহ্ন ছিল না বলে তারা জানিয়েছে। আবার মন্দির বা হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির কোনও চিহ্ন যে পাওয়া গেছে, তাও নিশ্চিত করতে পারেনি।
খালেকুজ্জামান বলেন, রায়ে বিষয়টি যেভাবে আসলো তা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বহু জটিলতার জন্ম দিতে পারে। সারা ভারতে পুরিসহ বহু স্থানের হিন্দু মন্দির যে বৌদ্ধ বা জৈন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপর প্রতিষ্ঠিত, এটা প্রমাণিত। তারা দুর্বল ও সংখ্যালঘিষ্ঠ বলে হয়তো এতে সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু হিন্দুত্ববাদীরা যে বাবরি মসজিদেই থেমে যাবে, তা বলা কঠিন। কারণ এদের অনেকে তাজমহল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান বলে তাজমহল রক্ষা পেলেও ছোটখাটো বহু বিষয়ে যে উঁকি দিতে থাকবে না, তা বলা কঠিন।

শেয়ার করুন
পূর্ববর্তী পোষ্ট
পরবর্তী পোষ্ট